ধূসর খঞ্জন | Grey Wagtail | Motacilla Cinerea

336
ধূসর খঞ্জন
ধূসর খঞ্জন | ছবিঃ গুগল

ধূসর খঞ্জন প্রচণ্ড  শীতে পরিযায়ী হয়ে আসে দেশে। আশ্রয় নেয় জলা-জঙ্গলের কাছাকাছি কোথাও। তবে গভীর জঙ্গলে নয়; অল্পসল্প জঙ্গল রয়েছে এমন স্থান পছন্দ। পারত পক্ষে গাছে চড়ে না খুব একটা। শিকার করে জলাশয় এলাকায়। তাই বলে কিন্তু জলে নেমে  শিকার ধরে না। জল সংলগ্ন ভূমিতে পোকামাকড় খুঁজে বেড়ায়। সাধারণত দৌড়ে শিকার ধরে। দেখতে ভীষণ সুন্দর। স্লিম গড়ন।

প্রজাতির অন্যদের তুলনায় এরা বেশি আকর্ষণীয়। স্বভাবে ভারি চঞ্চল। সবসময় লেজ দুলিয়ে হাঁটে। গলার সুর ও চমৎকার। ডাকে ‘ছিছিক-ছিক’ সুরে। সময়তে ‘টিজি ডিজিট সিং ছিপ’ সুরেও ডাকে। আবার প্রজনন সময় ঘনঘন দম নিয়ে সুর করে ডাকে ‘জি জি’। তখন বেশিরভাগ সময় উড়তে উড়তেই ডাকে। তবে প্রজনন সময়ে এতদাঞ্চলে থাকে না, পাড়ি জমায় নিজ বাসভূমি ইউরোপ, আফ্রিকায়।

পাখির বাংলা নামঃ ধূসর খঞ্জন, ইংরেজি নামঃ গ্রে ওয়াগটেইল (Grey wagtail), বৈজ্ঞানিক নামঃ Motacilla Cinerea |

আরো পড়ুন…
•হলদেমাথা খঞ্জন •সাদা খঞ্জন •বন খঞ্জন

দেশে প্রায় আট প্রজাতির খঞ্জন দেখা যায়- বনখঞ্জন, সাদা খঞ্জন, বড় পাকড়া খঞ্জন, পাকড়া খঞ্জন, ধূসর খঞ্জন, হলুদ খঞ্জন, হলদে মাথা খঞ্জন, কালো মাথা খঞ্জন। বড় পাকড়া খঞ্জন ছাড়া অন্যরা পরিযায়ী হয়ে আসে। ওদের মধ্যে কিছু প্রজাতি দেশে ডিম-বাচ্চা তোলে। প্রজাতির গড় দৈর্ঘ্য ১৭-১৮ সেন্টিমিটার। তন্মধ্যে লেজ ৯ সেন্টিমিটার। ঠোঁট নীলচে ধূসর। মাথা, পিঠ, লেজের উপরিভাগ ধূসর। ডানা ও লেজ কালোর ওপর সাদা খাড়া ডোরা দাগ। ডানার নিচ থেকে লেজের শেষাংশ পর্যন্ত পরিষ্কার হলুদ। ডানার প্রান্ত কালচে। গলা সাদাটে। পেট ও লেজের নিচ হলদেটে। স্ত্রী পাখির মাথা কালো, নিচের অংশ হলুদ। থুতনি, গলা কালো। প্রজনন সময়ে গলার কালো রঙ থাকে না।

প্রধান খাবারঃ পোকামাকড়। প্রজনন মৌসুম এপ্রিল থেকে জুলাই। ওই সময় ইউরোপ ও আফ্রিকার দক্ষিণের দেশগুলোতে অবস্থান করে। মাঝেমধ্যে এশিয়ার বিভিন্ন দেশেও ডিম-বাচ্চা তোলে।  ডিম পাড়ে ৪-৬টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ১৩-১৫ দিন।

লেখকঃ আলম শাইন। কথা সাহিত্যিক, কলাম লেখক, পাখি ও বন্যপ্রাণী বিশারদ এবং পরিবেশবিদ।