
মুরগি কাপাসি শীতের পরিযায়ী। বৈশ্বিক বিস্তৃতি দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চল। এ ছাড়াও কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো পর্যন্ত বিস্তৃতি রয়েছে। প্রাকৃতিক আবাস্থল ধানক্ষেত, গমক্ষেত, উন্মুক্ত বনভূমি, ছোট নদ-নদী ও জলাশয়ের আশপাশ। ক্ষেত খামারের ওপর চক্কর দিয়ে শিকার খুঁজে বেড়ায়। একাকী কিংবা জোড়ায় বিচরণ করে। অনেক সময় ছোট দলেও দেখা যায়। চেহারায় হিংস তার ছাপ লক্ষ করা গেলেও স্বভাবে তত হিংস নয়। বিশ্বে এদের অবস্থান সন্তোষজনক নয়। মূলত শস্যক্ষেতে ব্যাপক কীটনাশকের ব্যবহার এবং আবাসন সংকটের কারণে প্রজাতিটি হুমকির মুখে পড়েছে এবং প্রজননে বিঘ্ন ঘটছে। ফলে আইইউসিএন এদের ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে।
পাখির বাংলা নামঃ মুরগি কাপাসি, ইংরেজি নামঃ নর্দান হ্যারিয়ার (Northern Harrier), বৈজ্ঞানিক নামঃ Circus cyaneus |
আরো পড়ুন…
•পুবের পানকাপাসি
•মন্টেগুর কাপাসি
•পাকড়া কাপাসি
•পশ্চিমা পানকাপাসি
•ধলা কাপাসি
•ভুবন চিল
•শঙ্খচিল
প্রজাতির গড় দৈর্ঘ্যে ৪১-৬১ সেন্টিমিটার। স্ত্রী-পুরুষ পাখির গায়ের রঙ ভিন্ন। পুরুষের তুলনায় স্ত্রী পাখি আকারে বড়। পুরুষ পাখির মাথা, ঘাড়, পিঠ ও ডানা গাঢ় ধূসর। লেজের ছয়-আটটি পালক ধূসর বাদামি। দেহতল ধূসরাভ হলদে। স্ত্রী পাখির মাথা ও পিঠ ধূসর বাদামি। উভয়ের শিং কালো রঙে ঠোঁটের অগ্রভাগ বড়শির মতো বাঁকানো। পা ও পায়ের পাতা হলুদ, নখ কালো। পুরুষ পাখির ঠোঁটের গোড়া হলদেটে। চোখ হলুদ। যুবাদের রঙ ভিন্ন।
প্রধান খাবারঃ ব্যাঙ, ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণী, ছোট পাখি, ইঁদুর, খরগোশ ও বড় পোকামাকড়। প্রজনন সময় মধ্য এপ্রিল থেকে মে। বাসা বাঁধে ঝোপের ভেতর, জলাভূমির কাছে মাটিতে চিকন ডালপালা, নলখাগড়া, ঘাস দিয়ে বাসা বাঁধে। ডিম পাড়ে ৪-৫টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ৩০-৩২ দিন। সপ্তাহ চারেকের মধ্যে শাবক স্বাবলম্বী হয়।
লেখকঃ আলম শাইন। কথাসাহিত্যিক, কলামিস্ট ও বন্যপ্রাণী বিশারদ।