কালচে দামা | Naumanns Thrush | Turdus naumanni

225
কালচে দামা
কালচে দামা| ছবি: ইন্টারনেট

কালচে দামা ভূচর পাখি। শীতে পরিযায়ী হয়ে আসে। এতদাঞ্চলে প্রজনন ঘটে না। চেহারা মোটামুটি আকর্ষণীয়। প্রাকৃতিক আবাসস্থল তুষারপাত হয় এমন তৃণভূমি অঞ্চল। পাথুরে এলাকায়ও দেখা যায়। বিচরণ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে। পুরুষ পাখির গানের গলা ভালো। গাছের উঁচু ডালে বসে খুব ভোরে এবং গোধূলীলগ্নে গান গায়। স্বভাবে লাজুক। বেশির ভাগই একাকী বিচরণ করে।

প্রজনন মৌসুমে জোড়ায় জোড়ায় দেখা যায়। খাদ্যের সন্ধানে ঘুরে বেড়ায় লতাগুল্ম কিংবা ঝোপের নিচে। পরিত্যক্ত বা স্যাঁতস্যাঁতে এলাকার লতাপাতা উল্টিয়ে এবং ঘন ঘন ঠোঁট চালিয়ে খাবার খোঁজে। দ্রুত দৌড়াতে পারে, অসম্ভব দ্রুত। দুই পা একত্রিত করে লাফানোর মতো দৌড়ায়। গাছের উঁচুতে বিচরণ করে না। মাঝারি আকৃতির ফাঁকা ডালে বেশি দেখা যায়। দেশের সর্বত্র দেখা যাওয়ার নজির নেই। বৈশ্বিক বিস্তৃতি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং পশ্চিম ইউরোপ পর্যন্ত। বিশ্বব্যাপী হুমকি নয়।

পাখির বাংলা নামঃ কালচে দামা, ইংরেজি নামঃ নাউম্যান’স থ্রাস, (Naumann’s Thrush), বৈজ্ঞানিক নামঃ Turdus naumanni |

আরো পড়ুন…
•কমলাদামা •নীল শিলাদামা •লালগলা দামা
•ধূসর দামা •ধূসর ডানা কালো দামা •সাদাভ্রু দামা
•লম্বাঠোঁটি দামা •কালোবুক দামা •সাদাঘাড় কালো দামা

প্রজাতির গড় দৈর্ঘ্য ২৩-২৫ সেন্টিমিটার। ওজন ৬৩-৮১ গ্রাম। মাথা, ঘাড় ও পিঠ জলপাই বাদামির সঙ্গে কালো ছিট। ডানার প্রান্ত পালক পাটকিলে। লেজ কালচে জলপাই রঙের। চোখের ওপর দিয়ে সাদা চওড়া টান ঘাড়ে ঠেকেছে। গলা আঁশটে ক্রিমসাদা। বুক থেকে লেজতল পর্যন্ত কালো-সাদা বুটিক। চোখ কালো। উপরের ঠোঁট কালচে, নিচের ঠোঁট হলদে জলপাই। পা ময়লা হলদে, নখ কালচে।

প্রধান খাবারঃ কীটপতঙ্গ, পোকামাকড় ও কেঁচো। প্রজনন মৌসুম মে থেকে জুন। অঞ্চলভেদে প্রজনন মৌসুমের হেরফের রয়েছে। সাইবেরিয়া অঞ্চলে অধিক প্রজনন ঘটে। বাসা বাঁধে ভূমি থেকে ২-৭ মিটার উঁচুতে। গভীর কাপ আকৃতির বাসা। উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করে শৈবাল, শুকনো ঘাস ও লতাপাতা। ডিম পাড়ে ৩-৫টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ১৪-১৫ দিন।

লেখকঃ আলম শাইন। কথাসাহিত্যিক, কলামলেখক, বন্যপ্রাণী বিশারদ ও পরিবেশবিদ।