খাটো আঙ্গুল সাপঈগল উপমহাদেশী অঞ্চলে শীতে পরিযায়ী হয়ে আসে। বৈশ্বিক বিস্তৃতি রাশিয়া, পূর্ব ইন্দোনেশীয় দ্বীপপুঞ্জ, ইরান, মঙ্গোলিয়া, চীন, উত্তর-পশ্চিম আফ্রিকা ও দক্ষিণ-পশ্চিম ইউরোপের বিভিন্ন অঞ্চল। মরু কিংবা পার্বত্য এলাকায় বিচরণ আধিক্য। খোলা মাঠপ্রান্তর, জলাভূমির আশপাশেও দেখা মেলে। সাপ ও সরীসৃপ আছে এমন এলাকায় বেশি পরিলক্ষিত হয়। হিংস প্রজাতির পাখি। দৃষ্টিশক্তি প্রখর। প্রায় ৫০০ মিটার উঁচু থেকেও শিকার নজরে পড়ে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২৩০০ মিটার উঁচুতেও দেখা যায়। বিচরণ করে একাকী কিংবা জোড়ায় জোড়ায়।
পাখির বাংলা নামঃ খাটো আঙ্গুল সাপঈগল, ইংরেজি নামঃ শর্ট-টোড সেক ঈগল (Short-toed Snake Eagle) বৈজ্ঞানিক নামঃ Circaetus gallicus | এরা ‘মাথাভারি ঈগল’ নামে পরিচিত।
আরো পড়ুন…
•ধলাপেট সিন্ধুঈগল
•বৃহৎ ঈগল
•বড় চিত্রা ঈগল
•বুট পা ঈগল
•খয়েরি ঈগল
•বনেলি ঈগল
•বাদামি ঈগল
•মেটেমাথা কুরাঈগল
•লালপেট ঈগল
•ধলালেজ ঈগল
•ছোট চিত্রা ঈগল
•কুড়া ঈগল
প্রজাতি দৈর্ঘ্যে ৬২-৭০ সেন্টিমিটার। প্রসারিত ডানা ১৬৬-১৮৮ সেন্টিমিটার। ওজন পুরুষ পাখি ১.২-২ কেজি। স্ত্রী পাখি ১.৩-২.৩ কেজি। মাথা, ঘাড় ও গলা সাদার ওপর বাদামি দাগ। পিঠ বাদামি, মাঝে মধ্যে সাদা টান। ডানার প্রান্ত পালক গাঢ় বাদামি। লেজ কালচে বাদামি। বুক ও পেট সাদা। চোখ কমলা-হলুদ। ঠোঁট শিং কালো শক্ত মজবুত, অগ্রভাগ বড়শির মতো বাঁকানো। পা ফ্যাকাসে হলুদ। স্ত্রী-পুরুষ পাখি দেখতে একই রকম হলেও স্ত্রী পাখি আকারে সামান্য বড়। যুবাদের রঙ ভিন্ন।
প্রধান খাবারঃ ছোট-বড় সাপ ও সরীসৃপ। এ ছাড়াও ব্যাঙ, ছোট পাখি, ইঁদুর, খরগোশ ইত্যাদিও শিকার করে। প্রজনন সময় এপ্রিল থেকে অক্টোবর। স্থানভেদে প্রজনন ঋতুর হেরফের দেখা যায়। বাসা বাঁধে বড় গাছের উঁচু ডালে। ডালপালা দিয়ে বড়সড়ো অগোছালো বাসা বানায়। এক বসায় বহু বছর যাবৎ ডিম বাচ্চা তোলে। ডিম পাড়ে ১টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ৪৫-৪৭ দিন। শাবক স্বাবলম্বী হতে সময় লাগে ৭০-৮০ দিন। প্রজননক্ষম হতে সময় লাগে ৩-৪ বছর। গড় আয়ু ১৭ বছর।
লেখকঃ আলম শাইন। কথাসাহিত্যিক, কলামলেখক, বন্যপ্রাণী বিশারদ ও পরিবেশবিদ।