মন্টেগুর কাপাসি । Montagus Harrier । Circus pygargus

291
মন্টেগুর কাপাসি
ধুসরাভ মেঠো চিল | ছবি: ইন্টারনেট

মন্টেগুর কাপাসি শীত মৌসুমে উপমহাদেশীয় অঞ্চলে পরিযায়ী হয়ে আসে। নরওয়ে, গ্রেট ব্রিটেন, পর্তুগাল, রাশিয়া, বেলারুশ, পোল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড ও আফ্রিকার বিভিন্ন অঞ্চল পর্যন্ত এদের বিস্তৃতি। দেখতে ভয়ঙ্কর দর্শন হলেও মূলত এরা তত হিংস্র নয়। প্রজাতির অন্যদের তুলনায় দেখতে খানিকটা সুদর্শন।

প্রাকৃতিক আবাসস্থল কাঁটাওয়ালা চিরহরিৎ গুল্ম। বিচরণ ক্ষেত্র ধানক্ষেত, গমক্ষেত, উন্মুক্ত বনভূমি, বালিয়াড়ি, ছোট নদ-নদী, জলাশয়ের আশপাশ। ক্ষেত খামারের ওপর চক্কর দিয়ে শিকার খোঁজে। সমুদ্রপৃষ্ট থেকে ১৫০০ মিটার উচ্চতায়ও দেখা যাওয়ার নজির রয়েছে। বিশ্বে এদের অবস্থান সন্তোষজনক নয়। মূলত শস্যক্ষেতে ব্যাপক কীটনাশক (ডিটিটি) ব্যবহারের কারণে প্রজাতিটি হুমকির মুখে পড়েছে এবং প্রজননে বিঘ্ন ঘটছে।

পাখির বাংলা নামঃ মন্টেগুর কাপাসি, ইংরেজি নামঃ মন্টেগুয়াস হ্যারিয়ার (Montagu’s Harrier), বৈজ্ঞানিক নামঃ Circus pygargus | এরা ‘মন্টেগুর কাপাসি’ নামেও পরিচিত।

আরো পড়ুন…
•মুরগি কাপাসি •পুবের পানকাপাসি •পাকড়া কাপাসি •পশ্চিমা পানকাপাসি
•ধলা কাপাসি •ভুবন চিল •শঙ্খচিল

প্রজাতিটি দৈর্ঘ্যে ৪৩-৪৭ সেন্টিমিটার। প্রসারিত ডানা ৯৭-১১৫ সেন্টিমিটার। স্ত্রী-পুরুষ পাখির মধ্যে খানিকটা তফাৎ রয়েছে। পুরুষের তুলনায় স্ত্রী পাখি আকারে বড়। গায়ের রংও ভিন্ন। পুরুষ পাখির গড় ওজন ২৬৫ গ্রাম, স্ত্রী পাখির গড় ওজন ৩৪৫ গ্রাম। পুরুষ পাখির মাথা, ঘাড় ও পিঠ সুরমা ধূসর। ডানার প্রান্ত পালক কালচে। লেজ কালচে ধূসর। গাঢ় কালো রঙের ঠোঁটের অগ্রভাগ বড়শির মতো বাঁকানো। ঠোঁটের গোড়া হলুদ। চোখ উজ্জ্বল হলুদ, মণি কালো। পা ও পায়ের পাতা হলুদ, নখ কালো। অপরদিকে স্ত্রী পাখির গায়ের পালক হলদে বাদামি। দেহতল গাঢ় বাদামি।

প্রধান খাবারঃ ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণী, ছোট পাখি, ইঁদুর, বড় পোকামাকড়, ফড়িং ও পঙ্গপাল। প্রজনন সময় এপ্রিল থেকে মে। অঞ্চলভেদে প্রজনন মৌসুমের হেরফের রয়েছে। বাসা বাঁধে ঝোঁপের ভেতর, জলাভূমির কাছে মাটিতে অথবা ঘেসো ভূমিতে লম্বা ঘাস বিছিয়ে। ডিম পাড়ে ৩-৫টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ২৭-৪০ দিন। শাবক শাবলম্বী ছয় সপ্তাহ সময় লাগে। যৌবনপ্রাপ্ত হতে সময় লাগে ২-৩ বছর।

লেখকঃ আলম শাইন। কথাসাহিত্যিক, কলামিস্ট ও বন্যপ্রাণী বিশারদ।