পাতি ডাহর | Lesser florican | Sypheotides indica

518
পাতি ডাহর
পাতি ডাহর | ছবি: ইন্টারনেট

পাতি ডাহর বিলুপ্ত প্রজাতির আবাসিক পাখি। দেশে এদের শত বছর আগে দেখা গেছে। হালে দেখা যাওয়ার রেকর্ড নেই। এক সময় উত্তরবঙ্গের তৃণভূমিতে দেখা যেত। এদের বৈশ্বিক বিস্তৃতি বাংলাদেশ ছাড়া ভারত, নেপাল, পাকিস্তান ও মিয়ানমার পর্যন্ত। বিশ্বেও এদের অবস্থান সন্তোষজনক নয়। ফলে আইইউসিএন প্রজাতিটিকে লাল তালিকাভুক্ত করেছে। এরা আকারে বেশ বড়সড়। দেখতে অনেকটাই ময়ূরের মতো। চলাফেরাতেও ময়ূরের সঙ্গে মিল আছে। বিচরণ করে আর্দ্র খোলা লম্বা তৃণভূমিতে। অধিক ঝোঁপ-জঙ্গল এড়িয়ে চলে। এরা দ্রুত দৌড়াতে পারে। প্রজনন ঋতুতে পুরুষ পাখি নাচতে নাচতে শূন্যে উঠে যায়।

বাংলা নামঃ পাতি ডাহর, ইংরেজি নামঃ লেজার ফ্লোরিকান (Lesser florican), বৈজ্ঞানিক নামঃ Sypheotides indica | এরা ছোট ডাহর নামেও পরিচিত।

আরও পড়ুন…
•বাংলা ডাহর

পাতি ডাহরের গড় দৈর্ঘ্য ৪৬-৫১ সেন্টিমিটার। তুলনামূলক স্ত্রী পাখি বড়। স্ত্রী-পুরুষ পাখির চেহারা ভিন্ন। পুরুষ পাখির মাথা ও গলা কুচকুচে কালো, মাঝে-মধ্যে সাদা তিলক দেখা যায়। মাথার পেছন থেকে লম্বা উপরমুখী ঝুঁটি আছে। ঘাড় ও গলা চিকন। ঘাড়ের নিচ থেকে ধবধবে সাদা পট্টি ডানার দুপাশে বিস্তৃতি হয়েছে। পিঠ এবং লেজে সাদা-কালো তীরাকৃতির চক আঁকা। লেজ খাটো। ডানার দুপাশে ধবধবে সাদা। দেহতল কালচে। অন্যদিকে স্ত্রী পাখির বর্ণ সোনালি বাদামি। পিঠের উপরে তীরাকৃতির কালো ছোপ আছে। প্রজনন ঋতুর বাইরে পুরুষ পাখি দেখতে অনেকটাই স্ত্রী পাখির মতো। উভয়ের পা ও পায়ের পাতা হলুদ। ঠোঁট হলুদ হলেও উপরের অংশে কালো টান আছে।

প্রধান খাবারঃ পোকামাকড়, টিকটিকি ব্যাঙ, ঘাস বীজ, ঘাসের কচি ডগা, ফুল-ফল, পোকামাকড়, পঙ্গপাল, ফড়িং, পিঁপড়া ইত্যাদির প্রতি এদের দারুণ আসক্তি। এ পাখির প্রজনন মৌসুম জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর। অঞ্চলভেদে প্রজনন মৌসুমের হেরফের রয়েছে। বাসা বাঁধে ভূমিতে ঘাসলতা বিছিয়ে। ডিম পাড়ে ৩-৪টি। ফুটতে সময় লাগে ২১ দিন।

লেখকঃ আলম শাইন। কথাসাহিত্যিক, কলামিস্ট ও বন্যপ্রাণী বিশারদ।