
কালচে বুক লেজকাটা টুনি পরিযায়ী পাখি, ব্যতিক্রমী চেহারা। দূর থেকে দেখে মনে হতে পারে লেজের অগ্রভাগ বুঝি খসে পড়েছে। আসলে ওদের লেজের গড়নই অমন! বলা যায়, পুচ্ছবিহীন পাখি। তার ওপরে শরীরের তুলনায় মাথাটা বড় বিধায় চেহারাটা যুঁত্সই মনে হয় না। প্রাকৃতিক আবাসস্থল আদ্র চিরসবুজ ক্রান্তীয় বনের লতাগুল্ম। এছাড়াও গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ক্রান্তীয় আদ্র নিম্নভূমির বন এবং পার্বত্য অরণ্যে বিচরণ করে।
সাধারণত স্যাঁতসেঁতে এলাকায় এদের বেশি দেখা যায়। বেশিরভাগই একাকী বিচরণ করে। প্রজনন মৌসুমে জোড়ায় দেখা যায়। অত্যন্ত অস্থির মতি পাখি। কোথাও একদণ্ড বসে থাকার সময় নেই। সারাদিন ওড়াউড়ি। লতাগুল্মের ফাঁক-ফোকরে লাফিয়ে বেড়ায়। গানের গলা ভালো। বৈশ্বিক বিস্তৃতি বাংলাদেশ ছাড়া ভারত, নেপাল, নিম্ন হিমালয়, ভুটান, মিয়ানমার, দক্ষিণ চীন, উত্তর লাওস, উত্তর ভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ড পর্যন্ত। এদেশে খুব বেশি নজরে না পড়লেও বিশ্বব্যাপী এরা হুমকিতে নেই।
পাখিটির বাংলা নামঃ কালচে বুক লেজকাটা টুনি, ইংরেজি নামঃ স্লেটি বেলিড টেসিয়া (Slaty-bellied Tesia)| বৈজ্ঞানিক নামঃ টেসিয়া ওলিভা (Tesia oliva) এরা ‘স্লেটপেট টেসিয়া’ নামেও পরিচিত।
আরো পড়ুন…
•নীলটুনি
•লালমাথা লেজকাটা টুনি
•ধূসরাভবুক লেজকাটা টুনি
•দাগযুক্ত টুনি
•সোনালি মাথা টুনি
•বামন লেজকাটা টুনি
প্রজাতিটি দৈর্ঘ্যে ৯-১০ সেন্টিমিটার। মাথা, ঘাড় ও পিঠ উজ্জ্বল জলপাই রংয়ের। ডানা কালচে ধূসর। দেহতল স্লেট কালো। লেজ নেই বললেই চলে। ঠোঁট ছোট, চোখ কালো। লম্বা পা কালচে।
প্রধান খাবারঃ পোকামাকড়, শুককীট, অমেরুদণ্ডী প্রাণী। প্রজনন মৌসুম মে থেকে জুলাই। শৈবাল, শ্যাওলা, শিকড়, তন্তু দিয়ে বর্তুলাকার আকৃতির বাসা বাঁধে। ডিম পাড়ে ৩-৫টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ১৩-১৫ দিন।
লেখকঃ আলম শাইন। কথাসাহিত্যিক, কলামিস্ট ও বন্যপ্রাণী বিশারদ।