লম্বাঠোঁটি দামা | Long billed Thrus | Zoothera monticola

314
লম্বাঠোঁটি দামা
লম্বাঠোঁটি দামা | ছবি: ইন্টারনেট

লম্বাঠোঁটি দামা ভূচর পাখি। স্বভাবে পরিযায়ী। দেশে শীতে পরিযায়ী হয়ে আসে। প্রজাতির অন্যদের মতো চেহারা তত আকর্ষণীয় নয়। বিচরণ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে। হিমালয়ের ২২০০-৩৮০০ মিটারেও উঁচুতে দেখা যাওয়ার নজির রয়েছে। গানের গলা ভালো। মিষ্টি সুরে গান গায়। গাছের উঁচু ডালে বসে খুব ভোরে এবং গোধূলিলগ্নে গান গায়। স্বভাবে লাজুক। বেশিরভাগই একাকী বিচরণ করে।

প্রজনন মৌসুমে জোড়ায় জোড়ায় দেখা যায়। চিরহরিৎ ছায়াময় স্থানে বিচরণ। পাইন বন অথবা সুঁচালো চিরহরিৎ বনে বেশি দেখা যায়। দেখা যায় লতাগুল্মের নিচেও। আবার পাথুরে এলাকায়ও বিচরণ রয়েছে। এতদঞ্চলের পরিত্যক্ত বা স্যাঁতসেঁতে এলাকার লতাপাতা উল্টিয়ে এবং ঘন ঘন ঠোঁট চালিয়ে খাবার খোঁজে। গাছের উঁচুতে এরা বিচরণ করে না। দেশের সর্বত্র দেখা যাওয়ার নজির নেই। বৈশ্বিক বিস্তৃতি বাংলাদেশ, ভারত, মিয়ানমার, নেপাল, ও ভিয়েতনাম পর্যন্ত। প্রজাতিটি ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত হলেও বিশ্বব্যাপী হুমকি নয়।

প্রজাতিটির বাংলা নামঃ লম্বাঠোঁটি দামা, ইংরেজি নামঃ লং বিলেড থ্রাস (Long billed Thrush), বৈজ্ঞানিক নামঃ Zoothera monticola | এরা ‘লম্বাঠোঁট দামা’ নামেও পরিচিত। দেশে প্রায় ১৫ প্রজাতির দামা নজরে পড়ে। ত্মধ্যে ‘কমলা দামা’ ব্যতীত অন্যরা পরিযায়ী প্রজাতির পাখি।

আরও পড়ুন…
•কমলাদামা •নীল শিলাদামা •কালচে দামা
•লালগলা দামা •ধূসর দামা •ধূসর ডানা কালো দামা
•সাদাভ্রু দামা •কালোবুক দামা •সাদাঘাড় কালো দামা

এরা দৈর্ঘ্যে ২৬-২৮ সেন্টিমিটার লম্বা। ওজন ১১৫-১৩০ গ্রাম। স্ত্রী-পুরুষ পাখির চেহারা ভিন্ন। রঙে সামান্য পার্থক্য আছে। পুরুষ পাখির মাথা ফ্যাকাসে বাদামি। ঘাড় থেকে লেজ পর্যন্ত অন্ধকার জলপাই-বাদামি রঙের। সাদাটে গলায় বাদামি বুটিক। দেহতল ক্রিম সাদার ওপর বাদামি বুটিক। ঠোঁট ও পা শিংকালো। তুলনামূলক ঠোঁট খানিকটা লম্বা। অপরদিকে স্ত্রী পাখি লালচে-বাদামি।

প্রধান খাবারঃ কেঁচো, পোকামাকড়, লার্ভা, ছোট শামুক ইত্যাদি। মাঝে মধ্যে ছোট ফলফলাদি খেতে দেখা যায়। প্রজনন মৌসুম মে থেকে জুলাই। অঞ্চলভেদে প্রজনন মৌসুমের হেরফের রয়েছে। বাসা বাঁধে ভূমি থেকে ২-৭ মিটার উঁচুতে। গভীর কাপ আকৃতির বাসা। উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করে শৈবাল, শুকনো ঘাস ও লতাপাতা। ডিম পাড়ে ৩-৪টি। ডিম ফুটতে সময় ১৪-১৫ দিন।

লেখকঃ আলম শাইন। কথাসাহিত্যিক, কলামিস্ট ও বন্যপ্রাণী বিশারদ।