কালোবুক দামা | Black breasted Thrush | Turdus dissimilis

319
কালোবুক দামা
কালোবুক দামা | ছবি: ইন্টারনেট

কালোবুক দামা পরিযায়ী প্রজাতির ভূচর পাখি। বিচরণ দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে। কিছুটা শালিকের মতো চেহারা। গানের গলা ভালো। মিষ্টি সুরে গান গায়। গাছের উঁচু ডালে বসে খুব ভোরে এবং গোধূলিলগ্নে গান গায়। স্বভাবে লাজুক। বেশিরভাগই একাকি বিচরণ করে। প্রজনন মৌসুমে জোড়ায় জোড়ায় দেখা যায়। মূলত এদের প্রাকৃতিক আবাস্থল গ্রীষ্মমণ্ডলীয় বা ক্রান্তীয় আর্দ্র পার্বত্য অরণ্য। ম্যানগ্রোভ অরণ্যেও দেখা যেতে পারে। পাইন বন অথবা সুঁচালো চিরহরিৎ বনে বিচরণ।

এতদাঞ্চলের পরিত্যক্ত বা স্যাঁতসেঁতে এলাকার লতাপাতা উল্টিয়ে এবং ঘন ঘন ঠোঁট চালিয়ে খাবার খোঁজে। গাছের উঁচুতে এরা বিচরণ করে না। দেশের সর্বত্র দেখা যাওয়ার নজির নেই। বৈশ্বিক বিস্তৃতি বাংলাদেশ, ভারত, মিয়ানমার, চীন, লাওস, ভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ড পর্যন্ত। প্রজাতিটি ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। যার ফলে আইইউসিএন এদের লাল তালিকাভুক্ত করেছে।

প্রজাতিটির বাংলা নামঃ কালোবুক দামা, ইংরেজি নামঃ ব্ল্যাক ব্রেস্টেড থ্রাস (Black breasted Thrush), বৈজ্ঞানিক নামঃ Turdus dissimilis | এরা ‘কালাবুক দামা’ নামেও পরিচিত।

আরও পড়ুন…
•কমলাদামা •নীল শিলাদামা •কালচে দামা
•লালগলা দামা •ধূসর দামা •ধূসর ডানা কালো দামা
•সাদাভ্রু দামা •লম্বাঠোঁটি দামা •সাদাঘাড় কালো দামা

এরা দৈর্ঘ্যে ২২-২৩.৫ সেন্টিমিটার লম্বা। ওজন ৯০ থেকে ১০০ গ্রাম। স্ত্রী-পুরুষ পাখির চেহারা ভিন্ন। একই রকম হলেও রঙে সামান্য পার্থক্য আছে। পুরুষ পাখির মাথা কুচকুচে কালো। ঘাড় ধূসর কালো। পিঠ থেকে লেজ স্লেট ধূসর। ডানা বাদামি ধূসর। গলা থেকে বুক কুচকুচে কালো। দেহতল কমলা-সাদার মিশ্রণ। চোখের বলয় উজ্জ্বল হলুদ। ঠোঁট ও পা কমলা-হলুদ। অপরদিকে স্ত্রী পাখির মাথা ও পিঠ ধূসর বাদামি। গলায় ঘন কালোর পরিবর্তে বাদামি সাদার ওপর চিট চিট কালো দাগ। চোখের বলয় ফ্যাকাসে। ঠোঁট ও পা পুরুষ পাখিদের মতো উজ্জ্বল হলুদ নয়।

প্রধান খাবারঃ কেঁচো, পোকামাকড় ছোট ফল ইত্যাদি। প্রজনন মৌসুম এপ্রিল থেকে জুলাই। অঞ্চলভেদে প্রজনন মৌসুমের হেরফের রয়েছে। বাসা বাঁধে ভূমি থেকে ১-৩ মিটার উঁচুতে। কাপ আকৃতির বাসা। উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করে শৈবাল, শুকনো ঘাস ও লতাপাতা। ডিম পাড়ে ৩-৪টি। ডিম ফুটতে সময় ১৪-১৫ দিন।

লেখকঃ আলম শাইন। কথাসাহিত্যিক, কলামিস্ট ও বন্যপ্রাণী বিশারদ।