পাটকিলে মাথা ছাতারে | Chestnut capped Babbler | Timalia pileata

417
পাটকিলে মাথা ছাতারে
পাটকিলে মাথা ছাতারে | ছবি: ইন্টারনেট

পাটকিলে মাথা ছাতারে আবাসিক পাখি। দেখতে চমৎকার। গ্রামীণ বনেবাদাড়ে অল্পবিস্তর নজরে পড়ে। সমগ্রবিশ্বে এদের অবস্থান খুব বেশি সন্তোষজনক নয়। বাংলাদেশ ছাড়াও বৈশ্বিক বিস্তৃতি ভারত, নেপাল, মিয়ানমার, চীন, লাওস, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া ও ভিয়েতনাম পর্যন্ত। এরা বেশ সামাজিক পাখি। প্রজননকালীন জোড়ায় জোড়ায় বিচরণ করলেও ছোট দল দেখা যায়। রাত্র যাপনও করে দলবদ্ধভাবে। দলের একটি পাখি যে দিকে উড়ে যায় অন্যরাও সেদিকে উড়তে থাকে। আবার কেউ যদি পথ হারিয়ে ফেলে অন্যরা ডাকাডাকি করে তাকে পথ চিনিয়ে নিয়ে আসে।

সবচেয়ে মজাদার বিষয়টি হচ্ছে এদের দলের কেউ ডিম-বাচ্চা ফুটালে শাবকদের যত্ন আত্তি দলের সবাই মিলেই করে। অনেক সময় দলের সবাই মিলে অন্যের ডিমে তা দিতে দেখা যায়। এরা মূলত জলাশয় এলাকায় বিচরণ করে। বিশেষ করে শনবন, নলখাগড়ার বনের ভেতর আড্ডা জমে ভালো। এদের গানের গলা বেশ সুমধুর। ভারি মিষ্টি সুরে গান গায়। প্রজাতিটি বিশ্বব্যাপী ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। আইইউসিএন প্রজাতিটিকে লাল তালিকাভুক্ত করেছে।

পাখির বাংলা নামঃ পাটকিলে মাথা ছাতারে, ইংরেজি নামঃ চেস্টনাট ক্যাপেড ব্যাবলার (Chestnut-capped Babbler), বৈজ্ঞানিক নামঃ Timalia pileata | এরা ‘লালটুপি ছাতারে’ নামেও পরিচিত।

আরো পড়ুন…
•ডোরাকাটা ছোট বুনো ছাতারে •ছোট বুনো ছাতারে •লাল কপাল ছাতারে
•বাদা ছাতারে •লালঠোঁট কাস্তে ছাতারে •হলুদচোখ ছাতারে

এরা দৈর্ঘ্য ১৫-১৭ সেন্টিমিটার। ওজন ১৫-২৩ গ্রাম। স্ত্রী-পুরুষ পাখি দেখতে একই রকম। কপালে সাদা টান। মাথায় পাটকিলে অথবা মদ-বাদামি রঙের টুপি। থুঁতনি কালো। ঘাড়ে মালাসদৃশ ছাই ধূসর রেখা। পিঠ বাদামি। বাদামি লেজে কালচে ডোরা দাগ। দেহের তুলনায় লেজ খানিকটা লম্বা। গলা সাদা। পেট থেকে বস্তিপ্রদেশ পর্যন্ত হালকা বাদামি। লেজতল কালচে। চোখের মণি বাদামি। ঠোঁট নীলচে কালো। পা কালচে।

প্রধান খাবারঃ শুঁয়োপোকা, গোবরেপোকা ও অন্যান্য কীট-পতঙ্গ। ছোট ফল-ফলাদি, খেজুরের রসের প্রতিও আসক্তি রয়েছে। প্রজনন মৌসুম এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর। অঞ্চলভেদে প্রজনন মৌসুম হেরফের রয়েছে। জলাশয়ের কাছাকাছি ঘাসবন কিংবা লতাগুল্মের ভেতর ডিম্বাকৃতির বাসা বানায়। ডিম পাড়ে ৩-৪টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ১৪-১৬ দিন।

লেখকঃ আলম শাইন। কথাসাহিত্যিক, কলামিস্ট ও বন্যপ্রাণী বিশারদ।