আগুনে বাজপাখি দেখতে সুন্দর নয় এই পরিযায়ী পাখি। আগমন ঘটে তুন্দ্রা অঞ্চল থেকে। দেশে যত্সামান্য নজরে পড়ে। যখন-তখন নজরে পড়ে না। শুধুমাত্র প্রচণ্ড শীতে দেখা মিলে। আশির দশকে মিরপুরের উদ্ভিদ উদ্যানে দেখা যাওয়ার নজির রয়েছে। স্বভাবে ভারি হিংস । চেহারায়ও হিংস তার ছাপ লক্ষ্য করা যায়।
বাজ গ্রোত্রের পাখিদের মধ্যে এরাই সবচেয়ে বেশি হিংস। অন্যসব বাজের চেয়ে এদের নখ খুবই তীক্ষ্ন। তলোয়ারের ফলার মতো। নিজদের তুলনায় ছোট আকৃতির কোন পাখির নাগাল পেলে সহজে ছেড়ে দেয় না। সঙ্গে সঙ্গে পিছু নেয়। ধরে ফেলে উড়ন্ত অবস্থায়ই। উড়ার গতি অবিশ্বাস্য, ঘন্টায় প্রায় ৩২০ কিলোমিটার।
পাখির বাংলা নামঃ আগুনে বাজপাখি, ইংরেজী নামঃ পেরেগ্রিন ফ্যালকন, (Peregrine Falcon) বৈজ্ঞানিক নামঃ Falco peregrinus Tunstall । পাখি বিশারদদের কারো কারো কাছে ‘পেরেগ্রিন বাজপাখি’ নামেও পরিচিত।
আরো পড়ুন…
•ছোট তুর্কী বাজ
•বেসরা বাজ
•বড় বাজ
•তুরমুতি বাজ
•লম্বা পা বাজপাখি
•বাজপাখি
•সাদাচোখ বিশিষ্ট বাজ
•ছোট তুর্কী বাজ
•তিলা বাজ
•বড় বাজা
•পাতি শিকারি বাজ
লম্বায় ৩৪-৫৮ সেন্টিমিটার। ডানা প্রসারিত অবস্থায় ৭৪-১২০ সেন্টিমিটার। মাথা ও ঘাড় কালো। থুতনি, গলা, বুক রেখাহীন। ঘাড়ের পাশে রয়েছে সাদা ছোপ। পিঠ কালচে ধূসর। পেট লালচে-বাদামি। পেট থেকে উরুর উপর পর্যন্ত কালচে মিহি সারি। বড়শির মতো বাঁকানো ঠোঁটের গোড়া হলদেটে, অগ্রভাগ কালচে। চোখের চারপাশ এবং পায়ের বর্ণ হলুদ। তীক্ষ্ন নখর কালো। অল্প বয়সী পাখির বর্ণ একটু ভিন্ন ধাঁচের। ওদের উপরের দিকটা বাদামি, নিচের দিক সাদা মোটা খাড়া দাগযুক্ত।
প্রধান খাবারঃ ছোট পাখি। উড়ন্ত অবস্থায়ই ছোট পাখি শিকার করে। এছাড়া জলাশয়ে বিচরণকারী পাখি শিকার করে। বিশেষ করে বালিহাঁস, পানকৌড়ি এদের শিকারে পরিণত হয় বেশি। প্রজনন মৌসুম মার্চ-মে। গাছের উঁচুডালে বাসা বাঁধে। বাসা বানাতে উপকরণ হিসাবে ব্যবহার করে সরু ডালপালা। ডিম পাড়ে ৩-৪টি। ডিমে তা দেয় স্ত্রী পাখি একাই। ডিম ফুটতে সময় লাগে ২৯-৩২ দিন। শাবক স্বাবলম্বী হতে সময় লাগে ৩৫-৪২ দিন।
লেখকঃ আলম শাইন। কথা সাহিত্যিক, কলাম লেখক, পাখি ও বন্যপ্রাণী বিশারদ এবং পরিবেশবিদ।