নলঘোঙ্গা | Cinnamon bittern | Ixobrychus cinnamomeus

316
নলঘোঙ্গা
নলঘোঙ্গা | ছবি: ইন্টারনেট

নলঘোঙ্গা পাখির দেখা আজকাল খুব কমই মেলে আমাদের দেশে। খাদ্যের নিশ্চয়তা থাকলেও প্রজননের উপযুক্ত পরিবেশ সংকটের কারণে বংশ বিস্তার ব্যাহত হচ্ছে। ফলে অস্তিত্ব সংকটের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছে এ প্রজাতির পাখি। নির্জনতা প্রিয় এ পাখি সব সময় লোকচক্ষুর অন্তরালে থাকতে পছন্দ করে। নলবন কিংবা জলাশয়ের পাশের ঝোপ-জঙ্গলে একাকী বসে শরীরটাকে প্রকৃতির সঙ্গে মিশিয়ে রাখে এরা। তবে সুযোগ পেলে বা পরিবেশ অনুকূলে থাকলে শিকারের নেশায় ধান ক্ষেতের আইলে বসে মাছ কিংবা ব্যাঙাচি শিকার করতে দ্বিধাবোধ করে না।

সুন্দর এ পাখির বাংলা নামঃ নলঘোঙ্গা, ইংরেজি নামঃ সিন্নামন বিটার্ন, (Cinnamon bittern), বৈজ্ঞানিক নামঃ Lxobrychus cinnamomeus, গোত্রের নামঃ আরডিদি । লাল বক নামেও পরিচিত। বক প্রজাতির পাখিদের মধ্যে আকারে খানিকটা ছোট এ পাখি।

আরো পড়ুন…
•গো বক •সবুজ বক •বেগুনি বক •খুন্তে বক •হলদে বক •রঙিলা বক
•ধূসর বক •কালিবক •দেশি কানিবক •ছোট ধলা বক •নিশিবক

নলঘোঙ্গা লম্বায় ৩৮-৪০ সেন্টিমিটার। গায়ের রঙ বাদামি-লালচে। গলা ও পেট হালকা লাল। গলার মাঝ বরাবর গাঢ় ডোরাদাগ গিয়ে ঠেকেছে ঘাড় পর্যন্ত। বুকের সামনের ভাগ লালচে কালো মেশানো। তলা ফিকে এবং ডোরাকাটা। শক্ত, মজবুত ঠোঁটের গোড়াটা হলুদ, অগ্রভাগ কালো। পা ও আঙ্গুল হলদে সবুজ। স্ত্রী-পুরুষ দেখতে একই রকম মনে হলেও সামান্য পার্থক্য রয়েছে। সূক্ষ্ম পার্থক্যটুকু হচ্ছে, স্ত্রী পাখির পিঠের বর্ণ পুরুষের তুলনায় হালকা ফিকে।

প্রধান খাবারঃ মাছ, ছোট ব্যাঙ, জলজ পোকামাকড়। প্রজনন সময় বর্ষা থেকে শরৎকাল। নলবন কিংবা জলাশয়ের কাছে ঘাসবনে অথবা কচুরিপানার ঘনপাতার আড়ালে বাসা বাঁধে। বাসা বানাতে ব্যবহার করে যৎসামান্য লতাপাতা। ডিম পাড়ে ৪-৬টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ২১-২৩ দিন।

লেখকঃ আলম শাইন। কথাসাহিত্যিক, কলামিস্ট ও বন্যপ্রাণী বিশারদ।