সাদা খঞ্জন | White wagtail | Motacilla alba

1374
সাদা খঞ্জন
সাদা খঞ্জন | ছবি: তৌহিদ পারভেজ বিপ্লব

ধলেশ্বরী নদীর বাঁকেই মুন্সীগঞ্জ জেলা সদরের অবস্থান। সদরের অদূরেই মিরকাদিম পৌরসভা। সেটিরও অবস্থান ধলেশ্বরীর পাড়ে। এ মাঠে প্রতি বছর আমি কটি স্লিম গড়নের পাখিকে নির্ভয়ে বিচরণ করতে দেখি। বিশেষ করে ওরা শীত শুরু হওয়ার আগ মুহূর্তেই এসে হাজির হয়। থাকে দীর্ঘদিন। একেবারে চৈত্রের শেষ পর্যন্ত থাকে। পাখিগুলো দেখতে ভারি চমৎকার। চেহারাটা বেশ মায়াবী। জোড়ায় জোড়ায় কিংবা একাকী বিচরণ করে। সামান্য দূর থেকে ওদের দেখে আনন্দ পাই তখন। অত্যন্ত চঞ্চল প্রকৃতির পাখি এরা। স্থিরতা এদের মাঝে খুবই কম। মাঠে বিচরণকালে সারাক্ষণ লেজ নাড়তে দেখা যায়। আসলে ওদের কোমরের গড়নটাই অমন। গড়ন একটু ভিন্ন ধাঁচের হওয়ায় সারাক্ষণ কাঁপতে থাকে। এ কারণে লেজটাও দুলতে থাকে। আর তা দেখে মনে হয় বুঝি ওরা নেচে বেড়ায় সারাদিন।

পাখির বাংলা নামঃ সাদা খঞ্জন, ইংরেজি নামঃ হোয়াইট ওয়াগটেল, (White wagtail), বৈজ্ঞানিক নামঃ Motacilla alba, গোত্রের নামঃ মোটাকিল্লিনি ।

আরও পড়ুন…
•ধূসর খঞ্জন •হলদেমাথা খঞ্জন •বন খঞ্জন

সাদা খঞ্জন লম্বায় ৮ ইঞ্চি। চিকন শরীর। শরীরের তুলনায় লেজটা লম্বা। এদের কপাল, চোখের দু’পাশ, গলা ও গাল সাদা। মাথা, ঘাড়, ডানার কিছু পালক কালো। বুকে কালো ছাপ। পিঠ ছাই-ধূসর। কিছু পালক ধূসর-সাদার মিশ্রণ। লেজ কালো, দু’পাশের পালক সাদা। বুক ও পেটের সব পালক সাদা। ঠোঁট-পা কালো। স্ত্রী-পুরুষ পাখি দেখতে এক রকম মনে হলেও পার্থক্য সামান্য। স্ত্রী পাখি সামান্য দীপ্তিহীন।

এরা পতঙ্গভুক পাখি। সারাদিন মাঠে কিংবা নদীর পাড়ে ঘুরে ঘুরে পোকামাকড় শিকার করে। প্রজনন সময় মে-জুলাই। মাঠ-প্রান্তর অথবা জঙ্গলের নীরব স্থানে পেয়ালা আকৃতির বাসা বানায়। ডিম পাড়ে ৪-৬টি। ডিম ফুটতে সময় নেয় ১৫-১৭ দিন।

লেখকঃ আলম শাইন। কথাসাহিত্যিক, কলামিস্ট ও বন্যপ্রাণী বিশারদ।