ফিঙে | Black Drongo | Dicrurus macrocercus

89
ফিঙে
ফিঙে | ছবি: ইন্টারনেট

পক্ষীকুলের সমাজপতিরা একবার ‘পাখিরাজ’ নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছে। নির্বাচন পদ্ধতি হচ্ছে যে পাখি যত ওপরে উঠতে পারবে সে হবে তাদের রাজা। ঘোষণা অনুযায়ী পাখিরা একদিন আকাশে ডানা মেলল। মূলত চিল, বাজ, শকুন নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। ছোট পাখিদের মধ্যে ফিঙের সাধ জেগেছে আকাশে ওড়ার, সমস্যা হচ্ছে সে এত ওপরে উঠতে পারছে না। বিষয়টা মাথায় ঢুকতেই ওর মনে কূটবুদ্ধি এলো। ফিঙেটা চুপিচুপি চিলের পিঠে সওয়ার হলো। টের পায়নি তা চিল। চিল অন্য সব পাখিকে ছাড়িয়ে সবচেয়ে ওপরে উঠেছে এক সময়। আশপাশে তাকিয়েছিল যখন নিশ্চিত হয়েছে আর কেউ অত ওপরে উঠতে পারেনি, তখন সে নিচে নামতে শুরু করল। আর সেই সুযোগেই ফিঙে চিলের পিঠ ছেড়ে আরেকধাপ ওপরে উঠে গেল। কর্তৃপক্ষ দেখেছে ফিঙের অবস্থানই সবার ওপরে। সঙ্গে সঙ্গে ঘোষণা এসেছে ‘আজ থেকে পাখিদের রাজা ফিঙে’।

হ্যাঁ, ফিঙে খুবই সাহসী পাখি। চিল, বাজ, শকুনকেও ছেড়ে কথা বলে না। ওদের নাগালের মধ্যে এলেই ঠুকরিয়ে দেয়। বাসার কাছে গেলে মানুষকে পর্যন্ত আক্রমণ করে। ছোট পাখিরা ওদের অবস্থানের কাছাকাছি বাসা বেঁধে নিরাপদে থাকে তাই।

পাখিটার বাংলা নামঃ ফিঙে, ইংরেজি নামঃ ব্ল্যাক ড্রোঙ্গো, (Black Drongo), বৈজ্ঞানিক নামঃ ডিক্রুরাস মেক্রোসারকাস, (Dicrurus macrocercus)।

আরো পড়ুন…
•কাকঠুঁটো ফিঙে •ফিঙে

এ পাখি লম্বায় লেজসহ ২৮-৩১ সেন্টিমিটার। মাথা থেকে লেজের প্রান্ত পর্যন্ত কালো পালকে আবৃত। কালোর ওপরে নীলাভ আভা বের হওয়াতে পালিশ করা চকচকে দেখায়। এদের ঠোঁট ধাতব কালো, গোড়ায় সাদা ফোঁটা থাকে। অপ্রাপ্ত বয়স্কদের পেটের ওপর থাকে সাদা রেখা। যা দূর থেকে আঁশটে দেখায়। পা কালচে। স্ত্রী-পুরুষ পাখি দেখতে একই রকম।

প্রধান খাবারঃ কীটপতঙ্গ, ফুলের মধু টিকটিকি, প্রজাপতি, ভীমরুল, কেঁচো ইত্যাদি। প্রজনন সময় মার্চ থেকে জুন। গাছের তেডালের ফাঁকে বাটি আকৃতির বাসা বানায়। বাসা বানাতে উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করে পশুর পশম, সরু লতা-ঘাস ইত্যাদি। ডিম পাড়ে ৩-৪টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ১৪-১৫ দিন।

লেখকঃ আলম শাইন। কথাসাহিত্যিক, কলামিস্ট ও বন্যপ্রাণী বিশারদ।

Worlds Largest Bangla Birds Blog