
বড় সাদাকপাল রাজহাঁস ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার আবাসিক পাখি। বাংলাদেশে অনিয়মিত বিরলতম পরিযায়ী পাখি। আগমন ঘটে সাইবেরিয়া থেকে। আকারে বেশ বড়সড়। দেখতে অনেকটাই গৃহপালিত রাজহাঁসের মতো। দলবদ্ধভাবে বিচরণ করে। বিচরণ করে মিঠাপানির জলাশয়ে, বাদাবন কিংবা আর্দ্র তৃণভূমিতেও। উড়তে বেশ পারদর্শী। ওড়ার সময় নাকি সুরে গান গায় ‘ইহ..ঈয়ি..’। সমগ্র বিশ্বে এদের বিস্তৃতি ১৫ লাখ ৯০ হাজার বর্গ কিলোমিটার পর্যন্ত। কয়েক দশক ধরে এদের সংখ্যা অপরিবর্তিত বিধায় আইইউসিএন প্রজাতিটিকে ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত হিসেবে ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইনে এরা সংরক্ষিত। কেবল দেশের ঢাকা বিভাগে একবার দেখা যাওয়ার রেকর্ড রয়েছে। বাংলাদেশ ছাড়াও এদের দেখা মেলে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে।
পাখির বাংলা নামঃ বড় সাদাকপাল রাজহাঁস, ইংরেজি নামঃ গ্রেটার ফ্রন্টেড গুজ, (Greater White-fronted Goose), বৈজ্ঞানিক নামঃ Anser albifrons | পরিযায়ী উত্তর আমেরিকায় এদের ‘আঁশটেপেট’ নামে ডাকা হয়।
আরো পড়ুন…
•সুন্দরী হাঁস
•বৈকাল তিলিহাঁস
•ফুলুরি হাঁস
•সরু ঠোঁট ডুবরি হাঁস
•ঝুঁটি হাঁস
•নাকতা হাঁস
•পিয়ং হাঁস
•সাদা হাঁস
•নীলশির হাঁস
•পাতারি হাঁস
•লালশির হাঁস
•ভাদি হাঁস
•মরচেরং ভূতিহাঁস
•বালিহাঁস
•উত্তুরে ল্যাঞ্জাহাঁস
•পান্তামুখী হাঁস
লম্বায় ৬৪-৮১ সেন্টিমিটার। ওজন ২.৫ কেজি। কপাল সাদা। মাথা, গলা ও পিঠ গাঢ় ধূসরাভ-বাদামি। যা দূর থেকে মাছের আঁশের মতো মনে হতে পারে। ডানার পালকে চিকন সাদা টান। লেজ গাঢ় বাদামি, লেজতল সাদা। লেজের ডগায় সরু সাদা বলয়। বুক ও পেটে ময়লা সাদার ওপর কালচে রেখা। ঠোঁট গোলাপি। পা ও পায়ের পাতা কমলা হলুদ। স্ত্রী-পুরুষ পাখির মধ্যে তেমন কোনো তফাত নেই।
প্রধান খাবারঃ শস্যদানা, ঘাসের কচি ডগা, জলজ উদ্ভিদ, শামুক ও পোকামাকড়। প্রজনন মৌসুম এপ্রিল থেকে জুন। বাসা বাঁধে সাইবেরিয়ার তুন্দ্রা অঞ্চলে। উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করে শুকনো নরম ঘাস ও পালক। ডিম পাড়ে ৩-৬টি। ডিম ফুটতে সময় নেয় ২২-২৮ দিন।
লেখকঃ আলম শাইন। কথাসাহিত্যিক, কলাম লেখক, বন্যপ্রাণী বিশারদ ও পরিবেশবিদ।