গুলিন্দা বাটান | Curlew sandpiper | Calidris ferruginea

615
গুলিন্দা বাটান
গুলিন্দা বাটান | ছবি: ইন্টারনেট

সৈকতচারী পান্থপরিযায়ী পাখি গুলিন্দা বাটান । এরা শীত শুরুর আগেই আমাদের দেশে এসে হাজির হয়। গুলিন্দা বাটান এ সময় উত্তর এশিয়া থেকে পরিযায়ী হয়ে আসে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়। বাংলাদেশে এরা আশ্রয় নেয় উপকূলীয় এলাকার বেলাভূমি কিংবা নদ-নদীর মোহনাতে। বিচরণ করে নোনা কিংবা মিঠাজলের কাছাকাছি কর্দমাক্ত বালিতটে। এরা শান্ত স্বভাবের পাখি, চলাফেরা করে অত্যন্ত ভারিক্কিচালে। চঞ্চলতা এদের ভেতর নেই বললেই চলে। গায়ে পড়ে কারো সঙ্গে ঝগড়া বাধায় না। বরং অন্যসব বাটানের সঙ্গে মিলেমিশে শিকারে বের হয়।

নদ-নদীতে জোয়ার এলে দলের সবাই মিলে জটলা বেঁধে উঁচু বালিময় স্থানে আশ্রয় নেয়। জল নেমে গেলে অর্থাৎ ভাটায় খাদ্যের সন্ধানে বের হয়। তখন কাদামিশ্রিত বালিতটে পোকামাকড়, ছোট কেঁচো খুঁজে বেড়ায়। বিচরণকালীন আওয়াজ করে ‘ক্লিপ…ক্লিপ…’ সুরে। গুলিন্দা বাটান বাংলাদেশে সুলভ দর্শন এবং বিপদমুক্ত পাখি। এদের প্রতি শিকারিদের লোভ নেই মোটেও। ফলে দেশে নিরাপদেই বিচরণ করার সুযোগ পাচ্ছে এরা। যার কারণে শীত শেষ হয়ে গেলেও প্রজাতির কিছু পাখি আমাদের দেশে থেকেও যায়। অবশ্য ফি বছর দলের অন্যদের সঙ্গে ফিরে যায় ওরা।

পাখির বাংলা নামঃ গুলিন্দা বাটান, ইংরেজি নামঃ কারলিউ স্যান্ডপাইপার, (Curlew sandpiper), বৈজ্ঞানিক নামঃ Calidris ferruginea | এরা ‘বাঁকা চঞ্চু বাটান’ এবং ‘গুলিন্দাঠোঁটি চাপাখি’ নামেও পরিচিত।

আরো পড়ুন…
•শুক্তিভোজী বাটান •কাদা বাটান •পদ্মবাটান •লাল নুড়িবাটান
•কাঁকড়াভোজী বাটান •কালোবুক বাটান •ছোট বাবুইবাটান •পাতি বাটান

প্রজাতিটি লম্বায় ২০-২১ সেন্টিমিটার। দেহের উপরাংশ ধূসরাভ পাটকিলে। তার ওপর গাঢ় বাদামি রঙের ছোট ছোট ছোপ। লেজের উপরের দিকটা কালো, নিচের দিক সাদা। বুক ফিকে পাটকিলের ওপর চিকন রেখা। পেটের দিক সাদা। টানা চোখের চারপাশে সাদা বলয়। ঠোঁট কালো, লম্বা এবং নিচের দিকে বাঁকানো। লম্বা পা ধূসরাভ কালো। স্ত্রী-পুরুষ পাখি দেখতে একই রকম। প্রজনন মৌসুমে রং বদলায়। ধূসরাভ পাটকিলে রং বদলে গাঢ় বাদামি হয়। পিঠের পালক আঁশালো দেখায় তখন।

প্রধান খাবারঃ সৈকতের কীটপতঙ্গ, কেঁচো ইত্যাদি। প্রজনন মৌসুম এপ্রিল থেকে জুলাই। তুন্দ্রাঞ্চলের ঘেসোভূমিতে খড়কুটো বিছিয়ে বাসা বাঁধে। ডিম পাড়ে ৩-৪টি। ডিম ফুটতে সময় ১৮-২০দিন।

লেখকঃ আলম শাইন। কথাসাহিত্যিক, কলাম লেখক, বন্যপ্রাণী বিশারদ ও পরিবেশবিদ।

Worlds Largest Bangla Birds Blog