কালাপাশ চুটকি বেশিরভাগই একাকী বিচরণ করে। প্রজনন মৌসুমে জোড়ায় জোড়ায় দেখা যায়। বৃক্ষচারী পাখি। প্রাকৃতিক আবাস্থল চিরহরিৎ বন এবং মিশ্রবন। এ ছাড়া সাজানো বাগানেও দেখা মেলে। দেখা মেলে পর্বতশৃঙ্গেও। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৪০০০ মিটার উঁচুতে দেখা যাওয়ার রেকর্ড রয়েছে। পত্র-পল্লবহীন বৃক্ষের উঁচুশাখে একাকী শিকারের প্রতিক্ষায় বসে থাকে।
মাঝেমধ্যে উল্লসিত হয়ে ওড়াউড়ি করলেও অস্থিরমতির নয় ওরা। মূলত উড়ন্ত পোকামাকড় ওদের প্রধান শিকার। উড়ন্ত অবস্থায় শিকার ধরে। গায়ের রঙ আকর্ষণীয় না হলেও দেখতে মন্দ নয়। স্লিম, মায়াবি গড়ন। বৈশ্বিক বিস্তৃতি বাংলাদেশ ব্যতিত ভারত, হিমালয় অঞ্চল, মিয়ানমার, আফগানিস্তান, পূর্ব চীন, দক্ষিণ-পূর্ব তিব্বত, তাইওয়ান, মঙ্গোলিয়া, জাপান, উত্তর কোরিয়া, ফিলিপাইন, জাভা, দক্ষিণ-পূর্ব সাইবেরিয়া ও আইসল্যান্ড পর্যন্ত। বিশ্বে প্রজাতির অবস্থান তেমন সন্তোষজনক না হলেও হুমকি নয়।
পাখির বাংলা নামঃ কালাপাশ চুটকি, ইংরেজি নামঃ ডার্ক-সাইড ফ্লাইক্যাচার (Dark-sided Flycatcher), বৈজ্ঞানিক নামঃ Muscicapa sibirica | এরা ‘ঝুলরঙা চুটকি’ নামেও পরিচিত।
আরো পড়ুন…
•সাদাভ্রু নীলচটক
•বাদামি চটক
•বাদামিবুক চটক
•শিয়ালেবুক নীল চটক
•ধলাভ্রু চুটকি
দৈর্ঘ্য কমবেশি ১৩-১৪ সেন্টিমিটার। ওজন ৮-১২ গ্রাম। মাথা, ঘাড় ও পিঠ ধূসর কালো। মাঝেমধ্যে সাদা ক্ষুদ্র ছিট নজরে পড়ে। ডানার প্রান্ত পালক কালো। মাঝ বারাবর সাদা টান। লেজ কালচে। গলা এবং বুক কালচে-সাদা। পেট থেকে লেজতল সাদা। চোখ কালো, বলয় সাদা। ঠোঁট শিং কালো, গোড়া হলদে। পা ধূসর কালো।
প্রধান খাবারঃ শুককীট, মাকড়সা ইত্যাদি। প্রজনন মৌসুম মে থেকে আগস্ট। ভূমি থেকে ১৮ মিটারের মধ্যে শৈবাল বা তন্তু ও পশুর চুল দিয়ে গাছের ডালে কাপ আকৃতির বাসা বাঁধে। ডিম পাড়ে ৩-৫টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ১৩-১৫ দিন।
লেখকঃ আলম শাইন। কথাসাহিত্যিক, কলামলেখক, বন্যপ্রাণী বিশারদ ও পরিবেশবিদ।