
বাজপাখি শীতে পরিযায়ী হয়ে আসে। নজরে পড়ে খোলা মাঠ-বিল প্রান্তরে। খরগোশ, সাপ, গলিত মাংস, কীটপতঙ্গ এসব শিকার করে। পারতপক্ষে জলাশয় থেকে মাছ শিকার করে না। চাষাবাদ হয় এমন ক্ষেত-খামারের কাছাকাছি বেশি নজরে পড়ে। ফসলের ক্ষেত্রেও বিচরণ রয়েছে। বিচরণ করে জোড়ায় কিংবা ছোট দলে। অনেক ক্ষেত্রে ১০-১৫টির দলেও দেখা যায়। আকাশের অনেক উঁচুতে উঠে অনেকখানি পরিধি নিয়ে ঘুরতে থাকে। দীর্ঘক্ষণ শূন্যে ভেসে থাকতে পছন্দ করে। এরা শিকারি পাখি হলেও স্বভাবে তেমন হিংস নয়। প্রজাতির চারাভিযান বাংলাদেশ, ভারত, ইউরোপ, রাশিয়া, আফ্রিকা, তুরস্ক, জাপান, থাইল্যান্ড, হংকং এবং দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চল। বিশ্বে এরা ভালো অবস্থানে নেই।
পাখির বাংলা নামঃ বাজপাখি, ইংরেজি নামঃ কমন বাজার্ড (Common Buzzard), বৈজ্ঞানিক নামঃ Buteo buteo | এরা ‘পাতি তিসাবাজ’ নামেও পরিচিত।
আরো পড়ুন…
•ছোট তুর্কী বাজ
•বেসরা বাজ
•বড় বাজ
•তুরমুতি বাজ
•লম্বা পা বাজপাখি
•সাদাচোখ বিশিষ্ট বাজ
•ছোট তুর্কী বাজ
•তিলা বাজ
•বড় বাজা
•আগুনে বাজপাখি
•পাতি শিকারি বাজ
প্রজাতি দৈর্ঘ্যে ৪০-৫৮ সেন্টিমিটার। গড় ওজন ৪২৭ গ্রাম। প্রসারিত পাখা ১০৯-১৩৬ সেন্টিমিটার। স্ত্রী পাখি সামান্য বড়। মাথা, ঘাড়, পিঠ, ডানা ও লেজ কালচে বাদামির সঙ্গে সাদা ছোপ। ঘাড়ে, গলায় সাদা ছোপ স্পষ্ট। বুক, পেট ও বস্তি প্রদেশ হলদে বাদামির ওপর হলদে সাদা ছিট। চোখের বলয় হলুদ। কালো মণির চারপাশ বাদামি। বড়শির মতো বাঁকানো ঠোঁট কালো, গোড়া হলুদ রঙের। মুখের কিনারটাও হলুদ। পা হলুদ ও নখ কালো।
প্রধান খাবারঃ খরগোশ, ছোট সাপ, ইঁদুর, টিকটিকি, ব্যাঙ, কাঁকড়া, পোকামাকড় ইত্যাদি। প্রজনন মৌসুম মধ্য এপ্রিল। গাছের উঁচু শিখরে সরু ডালপালা দিয়ে অগোছালো বাসা বাঁধে। মাটিতে বা পাথুরে এলাকায়ও বাসা বাঁধে। একই বাসা বারবার ব্যবহার করে। ডিমের সংখ্যা ২-৪টি। তিন দিন অন্তর ডিম পাড়ে। ডিম ফুটতে সময় লাগে ৩৩-৩৫ দিন। শাবক স্বাবলম্বী হতে সময় লাগে ৬-৮ সপ্তাহ। তিন বছর বয়সে বয়োপ্রাপ্ত হয়। গড় আয়ু ২৫ বছর।
লেখকঃ আলম শাইন। কথা সাহিত্যিক, কলাম লেখক, পাখি ও বন্যপ্রাণী বিশারদ এবং পরিবেশবিদ।