শিয়ালেবুক নীলচটক | Rufous bellied niltava |Niltava sundara

137
শিয়ালেবুক নীলচটক
শিয়ালেবুক নীল চটক | ছবি: ইন্টারনেট

শিয়ালেবুক নীলচটক হিমালয়াঞ্চল থেকে পরিযায়ী হয়ে আসে। আমাদের দেশে বিচরণ করে চিরহরিৎ এবং মিশ্র মোচাকৃতি এবং পর্ণমোচী লতাগুল্মে। অন্যান্য স্থানে প্রাকৃতিক আবাসস্থল ক্রান্তীয় আর্দ্র নিন্মভূমির বনে অথবা পার্বত্য অরণ্যে। এদের মাথার আকৃতি বৃত্তাকার। অন্যসব নীল চটকের মতোই ব্যাক ব্রাশের আঁচড়ানো উজ্জ্বল ফ্যাকাসে নীলাভ মাথার তালু। ঘাড় ও গলা চকচকে নীল। দেহের সমস্ত পালক গাঢ় নীল। দেহতল শিয়ালে লাল। গাট্টাগোট্টা গড়ন। পুরুষ পাখির রূপ অসাধারণ। সে তুলনায় স্ত্রী পাখি অনেকটাই নিষ্প্রভ। এতটাই নিষ্প্রভ যে, স্ত্রী-পুরুষকে ভিন্ন প্রজাতির মনে হতে পারে। এরা খানিকটা চঞ্চল হলেও স্বভাবে লাজুক।

অন্যসব চঞ্চলমতি পাখিদের মতো লাফালাফি না করলেও গাছের একই ডালে বসে এদিক-সেদিক ঘাড় ঘুরিয়ে পোকামাকড় শিকার করে। অবার অকারণেও এদিক-সেদিক ফিরে তাকায়। কণ্ঠস্বর সুমধুর। ধীরলয়ে গান গায় ‘সুইই..সুইই..’ সুরে। বাংলাদেশ ছাড়া বৈশ্বিক বিস্তৃতি ভারত, নেপাল, ভুটান, পাকিস্তান, মিয়ানমার, লাওস ও থাইল্যান্ড পর্যন্ত। প্রজাতিটি বিশ্বব্যাপী হুমকির মুখে রয়েছে।

পাখির বাংলা নামঃ শিয়ালেবুক নীলচটক, ইংরেজি নামঃ রূপাস-বেলিড নীলটাবা (Rufous-bellied niltava), বৈজ্ঞানিক নামঃ Niltava sundara | এরা ‘লালপেট নীলমনি’ নামেও পরিচিত।

আরো পড়ুন…
•সাদাভ্রু নীলচটক •বাদামি চটক •বাদামিবুক চটক
•কালাপাশ চুটকি •ধলাভ্রু চুটকি

দৈর্ঘ্য কমবেশি ১৫-১৮ সেন্টিমিটার। ওজন ১৯-২৪ গ্রাম। স্ত্রী-পুরুষের চেহারায় যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে। পুরুষ পাখির মাথা, ঘাড় ও পিঠ গাঢ় নীল। লেজ খাটো, নীল। লেজের মধ্য পালক কালচে নীল। ডানার প্রান্ত পালক নীলচে-কালো। মুখমণ্ডল কিছুটা কালো। দেহতল শিয়ালে লাল রঙের। ঠোঁট কালচে নীল। ঠোঁটের গোড়ায় অল্পক’টি লোম। পা ধূসর নীল। স্ত্রী পাখির মাথা এবং ঘাড়ের দুই পাশে হালকা নীলের টান। দেহের ওপর অংশ লালচে-বাদামি। গলায় সাদা টান। দেহতল ধূসর বাদামি। ঠোঁট ও পা ধূসর বাদামি।

প্রধান খাবারঃ পিঁপড়া, গুবরেপোকা, শুককীট। মাঝেমধ্যে ছোট ফলও খায়। প্রজনন মৌসুম এপ্রিল থেকে আগস্ট। বাসা বাঁধে হিমালয়ের পাদদেশে গাছের ডালে। কাপ আকৃতির বাসা। উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করে শৈবাল, গাছের চিকন তন্তু। ডিম পাড়ে ২-৩টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ১৩-১৪ দিন।

লেখকঃ আলম শাইন। কথাসাহিত্যিক, কলাম লেখক, বন্যপ্রাণী বিশারদ ও পরিবেশবিদ।

Worlds Largest Bangla Birds Blog