জলদস্যু পাখি পরিযায়ী। বিচরণ করে মহাসাগরের উপকূল কিংবা উপসাগরীয় অঞ্চল এবং হ্রদ এলাকায়। এ ছাড়াও তুন্দ্রা অঞ্চলে গ্রীষ্মকালীন সময়ে মহাসমুদ্র এলাকার মহীসোপানে এবং উপকূলীয় এলাকার জলাভূমিতে বিচরণ করে। আবার পাথুরে এলাকায়ও দেখা মেলে। এরা ছোট ছোট দলে বিচরণ করে। সারা দিন সমুদ্রের বুকে উড়ে উড়ে ব্যস্ত সময় পার করে। দেখতে গোবেচারা টাইপ হলেও স্বভাবে কিছুটা হিংস্র এ পাখি অন্যসব জলাচর পাখির ধরা মাছ ঠোঁটে চেপে ধরার মুহূর্তে কেড়ে নিয়ে খেয়ে ফেলে।
বাংলা নামঃ জলদস্যু পাখি, ইংরেজি নামঃ প্যারাসিটিক (Parasitic Jaeger)। বৈজ্ঞানিক নামঃ Stercorarius parasiticus | এরা ‘পরজীবী জেগার’ নামেও পরিচিত।
আরও পড়ুন…
•বাদামি জলদস্যু পাখি
জলদস্যুদের মতো রুক্ষ্ম আচরণের ফলে এরা জলদস্যু পাখি নামে পরিচিতি পায়। এরা দৈর্ঘ্যে ৪১-৪৮ সেন্টিমটাির। প্রসারিত ডানা ১০৭-১২৫ সেন্টিমিটার। ওজন ৩০০ থেকে ৬৫০ গ্রাম। মাথার রং ধূসর কালো অথবা দুসরাভ-বাদামি। ঘাড় হরিদ্রাভ সাদা। পিঠ ডানা ও লেজ ধূসর কালো। লেজের অগ্রভাগ সুঁচালো। গলা, বুক ও তলপেট হরিদ্রাভ সাদা। ঠোঁটের গোড়া সাদাটে। কালো ঠোঁটের অগ্রভাগ বড়শির মতো বাঁকানো। চোখ বাদামি, পা ও পায়ের পাতা ধূসর কালো। পায়ের পাতা হাঁসের পায়ের মতো জোড়া লাগানো। যুবাদের চেহারা ভিন্ন।
প্রধান খাবারঃ মাছ। এছাড়াও অন্যান্য পাখিদের ডিম, ইঁদুর, পোকামাকড় এরা খায়। মাঝে মধ্যে ফলও খেতে দেখা যায়। প্রজনন মৌসুম মে থেকে সেপ্টেম্বর। বাসা বাঁধে মাটিতে অথবা পাথরের উপর শৈবাল, শ্যাওলা ও ঘাসলতা বিছিয়ে। ডিম পাড়ে সাধারণত ২টি। মাঝে মধ্যে ১-৩টি ডিম পাড়তে দেখা যায়। ফুটতে সময় লাগে ২৫-২৮ দিন। শাবক উড়তে শেখে ২৫-৩০ দিনের মধ্যে। প্রাপ্ত বয়স্ক হতে সময় লাগে ৩-৪ বছর।
লেখকঃ আলম শাইন। কথাসাহিত্যিক, কলামিস্ট ও বন্যপ্রাণী বিশারদ।