ঝুঁটিওয়ালা ঠোঁটকালো গাঙচিল | Sandwich Tern | Sterna sandvicensis

160
ঝুঁটিওয়ালা ঠোঁটকালো গাঙচিল
ঝুঁটিওয়ালা ঠোঁটকালো গাঙচিল | ছবি: ইন্টারনেট

ঝুঁটিওয়ালা ঠোঁটকালো গাঙচিল পরিযায়ী পাখি। স্যান্ডউইচ আকৃতির গড়ন। দেখতে অনেকটাই ‘বড়ঠোঁটি গাংচিল’দের মতো। চাল-চলনও ওদের মতোই। প্রজাতির দেখা মেলে উপকূলীয় অঞ্চলের নদ-নদীতে। বালুবেলাতেও বিচরণ করতে দেখা যায়। এছাড়া কৃষি জমিতে বিচরণ রয়েছে। মিঠা জলের চেয়ে লবণ জলে বিচরণ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। সাগরের কাছাকাছি এলাকায় বেশি দেখা যাওয়ার মূল কারণই এটি। বিচরণ করে ঝাঁক বেঁধে। কলোনি টাইপ বাসা বাঁধে। চলাচলরত নৌযানকে অনুসরণ করতে দেখা যায় প্রায়ই। নৌযানের পেছন পেছন চক্কর মেরে উড়ে জলে ঝাঁপিয়ে পড়ে মাছ শিকারের উদ্দেশ্যে। স্বভাবে শান্ত। ঝগড়াঝাটি পছন্দ নয়।

তবে নিজেদের মধ্যে কমবেশি ঝগড়া বাঁধে। এ সময় বিরক্ত হয়ে কর্কশ কণ্ঠে ডেকে ওঠে ‘ক্রাআ-ক্রা-আ’ সুরে। প্রজাতির উপস্থিতি দেশে সন্তোষজনক নয়। শিকারি পাখি ব্যতিরেকে এদেরকে পারতপক্ষে কেউ তেমন একটা বিরক্ত করে না। বাংলাদেশ ছাড়াও বৈশ্বিক বিস্তৃতি দক্ষিণ-পূর্ব যুক্তরাষ্ট্র, পূর্ব-দক্ষিণ আমেরিকা, মধ্য আমেরিকা, উত্তর-পশ্চিম-দক্ষিণ আমেরিকা, ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ, পশ্চিম আফ্রিকা, গ্রেট ব্রিটেন এবং ভূমধ্য অঞ্চল পর্যন্ত। এ ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দেখা যাওয়ার তথ্য রয়েছে। বিশ্বে এদের অবস্থান সন্তোষজনক নয় বিধায় আইইউসিএন প্রজাতিটিকে লাল তালিকাভুক্ত করেছে।

পাখির বাংলা নামঃ ঝুঁটিওয়ালা ঠোঁটকালো গাঙচিল, ইংরেজি নামঃ স্যান্ডউইচ টার্ন, (Sandwich Tern), বৈজ্ঞানিক নামঃ Sterna sandvicensis | এরা ‘স্যান্ডউইচ পানচিল’ নামে পরিচিত।

আরো পড়ুন…
•গাঙচিল •খয়রামাথা গাঙচিল •সাদাডানা গাঙচিল •কালামাথা গাঙচিল
•বড়ঠোঁটি গাঙচিল •হলদে পা গাঙচিল •কালাপেট গাঙচিল •নদীচিল

দৈর্ঘ্য ৩৭-৪৩ সেন্টিমিটার। প্রসারিত ডানা ৮৫-৯৭ সেন্টিমিটার। স্ত্রী-পুরুষ পাখি দেখতে একই রকম। প্রজনন পালক ভিন্ন। মাথায় টুপি আকৃতির ঘন কালো পালক, যা ঘাড় অবধি নেমে খাড়া হয়ে থাকে। পিঠ ও ডানা ধূসর সাদা। লেজ সাদা। দেহতল ধবধবে সাদা। ওড়ার পালক সাদা। চোখের বলয় কালো। ঠোঁট কালো, সুঁচালো, অগ্রভাগ হলদেটে। পা ও আঙ্গুল কালো।

প্রধান খাবারঃ ছোট মাছ, সামুদ্রিক কৃমি। এ ছাড়াও বালুচরে ঘুরে পোকামাকড়, সরীসৃপ, শুককীট খেতে দেখা যায়। প্রজনন মৌসুম মধ্য মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। অঞ্চলভেদে প্রজনন মৌসুমের হেরফের রয়েছে। উপকূলীয় এলাকার জলাশয়ের কাছাকাছি বেলাভূমি এলাকায় ঘাস, লতাপাতা বিছিয়ে বাসা বানায়। ডিম পাড়ে ২-৫টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ২২-২৩ দিন। শাবক স্বাবলম্বী হতে সময় লাগে ২৮-৩৫ দিন।

লেখকঃ আলম শাইন। কথাসাহিত্যিক, কলামিস্ট ও বন্যপ্রাণী বিশারদ।

Worlds Largest Bangla Birds Blog