বড় কানকুয়া | Greater Coucal | Centropus Sinensis

246
Greater-Coucal
বড় কানকুয়া | ছবি: তৌহিদ পারভেজ বিপ্লব

পাখির বাংলা নামঃ বড় কানকুয়া | ইংরেজি নামঃ গ্রেটার কুকাল, (Greater Coucal) | বৈজ্ঞানিক নামঃ Centropus Sinensis | অঞ্চলভেদে এদের কানাকোকা, হাড়িকুড়ি, কুক্কাল ইত্যাদি নামে ডাকা হয়। দেশে দুই প্রজাতির কানকুয়া দেখা যায়। যেমন- বড় কানকুয়া, ছোট কানকুয়া।

এ পাখি প্রতিবেশী পাখি। স্বভাবে হিংস্র। বিশেষ করে এদের গাঁও-গেরামের গৃহস্থবাড়ির আশপাশের জঙ্গলে বেশি নজরে পড়ে। প্রাকৃতিক আবাসস্থল স্যাঁতসেঁতে মাটি কিংবা ঝোপ-জঙ্গল। তেমন ভালোভাবে উড়তে পারে না। ঝোপ-জঙ্গলের ভিতরে হেঁটে হেঁটে খাবারাদি সংগ্রহ করে। ক্ষণে ক্ষণে ‘পুৎ পুৎ পুৎ’ শব্দে উচ্চকণ্ঠে ডেকে মানুষের পিলে চমকে দেয়। এরা পাখিরাজ্যে ‘ডাকাত পাখি’ নামে পরিচিত। ছোট পাখিদের যম। ছোট পাখিদের বাসার সন্ধান পেলে তচনছ করে দেয়। পায়ের শক্ত নখ এবং তীক্ষ ঠোঁট দিয়ে বাসাকে ফালা ফালা করে ডিম-বাচ্চা বের করে আনে। যে সব পাখি গাছের কোটরে ডিম পাড়ে ওদের ডিম-বাচ্চাও রেহাই পায় না। গাছের কোটরে লম্বা পা ঢুকিয়ে ডিম-বাচ্চা বের করে আনে।

হিংস্রতায় অদ্বিতীয় হলেও এ পাখিগুলো নিজেদের সব সময় পরিচ্ছন্ন রাখে। নিয়ম করে প্রত্যহ গোসলাদি সারে। ফলে শরীরটা থাকে বেশ চকচকে। বড় কানকুয়া লম্বায় ৪৬-৪৮ সেন্টিমিটার। শরীরের তুলনায় লেজ কিছুটা লম্বা। মাথা, ঘাড়, বুক, পেট নীলাভ কালো। পিঠ উজ্জ্বল খয়েরি। লেজ ধাতব কালো। চোখ টকটকে লাল। মণি কালো। নীলচে কালো ঠোঁটের অগ্রভাগটা বাঁকানো। পা ধাতব কালো। স্ত্রী-পুরুষ দেখতে একই রকম।

প্রধান খাবারঃ খাদ্য তালিকা বেশ লম্বা। পাখির ডিম-ছানা, ব্যাঙ, গেছো শামুক, ছোট সাপ, গিরগিটি, ইঁদুর, কেঁচো, গোসাপের বাচ্চা ইত্যাদি। খাদ্যাভাবে মাছও খায়। প্রজনন মৌসুম জুন থেকে সেপ্টেম্বর। বাসা বাঁধে বাঁশঝাড়, সুপারি কিংবা খেজুর গাছের মাথায়। এ ছাড়াও অন্যান্য ঝোপ-জঙ্গলের ভিতরেও বাসা বাঁধে। উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করে বাঁশপাতা, কাঁচা সুপারি পাতা, নারকেল পাতাসহ নানা ধরনের লতাপাতা। ডিমের সংখ্যা ৩-৪টি। ফুটতে সময় লাগে ১৪-১৬ দিন।

লেখকঃ আলম শাইন। কথাসাহিত্যিক, কলামলেখক, বন্যপ্রাণীবিশারদ ও পরিবেশবিদ।

Worlds Largest Bangla Birds Blog