খয়রাগলা নাকুটি আবাসিক পাখি হলেও যত্রতত্র দেখা মেলে না। চেহারা তত আকর্ষণীয় নয়। প্রাকৃতিক আবাস্থল খোলা মাঠ-প্রান্তর, তৃণভূমি, কৃষি জমি এবং জলাশয়ের আশপাশ। পোকামাকড়ের আধিক্যের কারণে জলাশয়ের আশপাশে ঝাঁকে ঝাঁকে ওড়াউড়ি করে। আবার পত্র-পল্লবহীন গাছেও ঝাঁকে ঝাঁকে বসে বিশ্রাম নেয়। প্রজনন মুহূর্তে জোড়ায় জোড়ায় দেখা যায়। এরা বাসাও বাঁধে দলবদ্ধ হয়ে। টানেল আকৃতির বাসা। পাহাড়, নদ-নদীর পাড়ে মাটির খাড়া দেয়ালে গর্ত খুঁড়ে ৩০ থেকে ৬০ সেন্টিমিটার টানেল করে বাসা বাঁধে।
কণ্ঠস্বর শ্রুতিমধুর না হলেও বিরক্তিকর নয়। অস্থিরমতির পাখি। উড়ন্ত পতঙ্গ শিকার করে। সারাদিন বিরতিহীন ওড়াউড়ি করে। বৈশ্বিক বিস্তৃতি দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চল, মাদাগাস্কার, পশ্চিম ইথিওপিয়া, সোয়াজিল্যান্ড, বাতসোয়ানা, তানজানিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা পর্যন্ত। বিশ্বে প্রজাতিটি সন্তোষজনক নয়। আইইউসিএন এদের লাল তালিকাভুক্ত করেছে।
পাখির বাংলা নামঃ খয়রাগলা নাকুটি, ইংরেজি নামঃ ব্রাউন-থ্রোটেড মার্টিন (Brown-throated Martin), বৈজ্ঞানিক নামঃ Riparia paludicola | এরা ‘বাদামি-গলা নাকুটি’ নামেও পরিচিত।
আরো পড়ুন…
•বালি নাকুটি
•সাদামাটা নাকুটি
প্রজাতির গড় দৈর্ঘ্য ১২ সেন্টিমিটার। ওজন ১১-১৫ গ্রাম। স্ত্রী-পুরুষের চেহারা অভিন্ন। মাথা, ঘাড়, পিঠ ও লেজ গাঢ় বাদামি। ডানা বাদামি-সাদা। ডানা লম্বা, লেজের প্রান্তে মিশেছে। লেজ মাছের লেজের মতো। গলা বাদামি। বুকের নিচ থেকে বাদবাকি সাদা। চোখ বাদামি। ঠোঁট খাটো, কালো। পা কালো, নখ বড় বড়।
প্রধান খাবারঃ উড়ন্ত পোকামাকড়। প্রজনন মৌসুম নভেম্বর থেকে ডিসেম্বর। অঞ্চলভেদে প্রজনন মৌসুমের হেরফের রয়েছে। কলোনি টাইপ বাসা। গর্তে বাসা বাঁধে। ডিম পাড়ে ২-৪টি। ফোটে ১২-১৩ দিনে।
লেখকঃ আলম শাইন। কথা সাহিত্যিক, কলামলেখক, বন্যপ্রাণী বিশারদ ও পরিবেশবিদ।