ভুবন চিল | Black Kite | Milvus migrans

391
ভুবন চিল
ভুবন চিল | ছবি: ইন্টারনেট

ভুবন চিল মাঝারি আকারের শিকারি পাখি। দেশের স্থায়ী বাসিন্দা। মূলত এরা নাতিশীতোষ্ণ এবং গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলের বাসিন্দা। বৈশ্বিক বিস্তৃতি এশিয়া, ইউরোপ, আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়া পর্যন্ত। দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে কমবেশি নজরে পড়ে। দেশে এদের অবস্থান সন্তোষজনক। জলাশয় কিংবা নদ-নদীর কিনারে এদের সাক্ষাৎ মেলে। একাকী অথবা ছোট দলেও নজরে পড়ে। প্রজাতির অন্যদের মতো অত হিংস নয় ভুবন চিল।

সমুদ্রপৃষ্ট থেকে ১৫০০ মিটার উঁচুতেও এদের দেখা যায়। উপরে উঠে বাঁশির মতো সুরে ‘চি..চি..চি..’ আওয়াজ করে। দীর্ঘ সময় ঘুড়ির মতো আকাশে ভেসে থাকতে পারে বিধায় ইংরেজিতে এদেরকে ‘ব্ল্যাক কাইট’ নামে ডাকা হয়। উল্লেখ্য, দূর থেকে এদের গায়ের রং কালো মনে হলেও আসলে এরা বাদামি-কালো মিশ্রণের।

পাখির বাংলা নামঃ ভুবন চিল, ইংরেজি নামঃ ব্ল্যাক কাইট (Black Kite), বৈজ্ঞানিক নামঃ Milvus migrans |

আরো পড়ুন…
•মুরগি কাপাসি •পুবের পানকাপাসি •মন্টেগুর কাপাসি •পাকড়া কাপাসি
•পশ্চিমা পানকাপাসি •ধলা কাপাসি •শঙ্খচিল

এরা দৈর্ঘ্যে ৪৭-৫৫ সেন্টিমিটার। গড় ওজন ৪৫০ গ্রাম। মাথা ও ঘাড় বাদামি। পিঠ বাদামি-কালো। গাঢ় বাদামি লেজের প্রান্তরটা কাঁটাযুক্ত মনে হতে পারে। বুক ও পেটে ফ্যাকাসে বাদামি টান। ওড়ার পালক কালো। কালো রঙের ঠোঁট শক্ত মজবুত, অগ্রভাগ বড়শির মতো বাঁকানো। নাকের কিনারটা হলুদ। চোখ গাঢ় বাদামি। পা বাদামি পালকে আবৃত। পা ও পায়ের পাতা হলুদ। স্ত্রী-পুরুষ পাখি দেখতে একই রকম হলেও স্ত্রী পাখি আকারে সামান্য বড়। অপ্রাপ্ত বয়স্কদের রং ভিন্ন।

প্রধান খাবারঃ টিকটিকি, ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণী, পোকামাকড় ও ফড়িং। এ ছাড়াও যাবতীয় ময়লা আবর্জনাও এরা খায়। উপমহাদেশীয় অঞ্চলে প্রজনন সময় জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারি। কিছু কিছু স্থানে আগস্ট ও নভেম্বরে বংশ বৃদ্ধি ঘটায়। এ ছাড়াও বছরের যে কোনো সময় বংশ বৃদ্ধি ঘটাতে পারে। স্থানভেদে প্রজনন ঋতুর হেরফের লক্ষ্য করা যায়। বাসা বাঁধে বড় গাছের উঁচু ডালে। চিকন ডালপালা দিয়ে বড়সড় অগোছালো বাসা বানায়। এক বাসায় বহু বছর যাবৎ ডিম বাচ্চা তোলে। ডিম পাড়ে ২-৩টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ৩০-৩৪ দিন। শাবক স্বাবলম্বী হতে সময় লাগে ৫০ দিনের মতো। প্রজননক্ষম হতে সময় লাগে ৪-৫ বছর।

লেখকঃ আলম শাইন। কথাসাহিত্যিক, কলামিস্ট ও বন্যপ্রাণী বিশারদ।

Worlds Largest Bangla Birds Blog