মরিচা কপাল ডোরাডানা | Rusty fronted Barwing | Actinodura egertoni

107
Rusty-fronted-Barwing
মরিচা কপাল ডোরাডানা | ছবি: ইন্টারনেট

মাথায় চমৎকার ঝুঁটি। দেহের তুলনায় লেজ খানিকটা লম্বা। দেখতে বুলবুলি পাখির মতো মনে হতে পারে। আসলে এরা বুলবুলি প্রজাতির কেউ নয়। প্রজাতিটি দেশের স্থায়ী বাসিন্দা হলেও যত্রতত্র দেখা যায় না। প্রাকৃতিক আবাসস্থল নাতিশীতোষ্ণ এলাকার ক্রান্তীয় আর্দ্র পার্বত্য অরণ্য। এ ছাড়া লতাগুল্মের ঝোপ কিংবা সুঁচালো চিরহরিৎ বনে বিচরণ রয়েছে। এরা একাকি বিচরণ করে না বললেই চলে। ছোট দলে বিচরণ করে। দলে কমপক্ষে ৬ থেকে ১২টি পাখি দেখা যায়।

শুধু প্রজনন মৌসুমে দলত্যাগ করে জোড়ায় জোড়ায় বিচরণ করে। এদের চেহারা রাগীরাগী হলেও স্বভাবে হিংস নয়। দলের সবাই একত্রে বা মিলেমিশে থাকতে পছন্দ করে। বাংলাদেশ ছাড়া বৈশ্বিক বিস্তৃতি উত্তর-পূর্ব ভারত, নেপাল (হিমালয়ের পাদদেশ), ভুটান, পশ্চিম মিয়ানমার, চীন (ইউনান) পর্যন্ত। বিশ্বে এদের অবস্থান খুব বেশি সন্তোষজনক নয় বিধায় আইইউসিএন প্রজাতিটিকে ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে।

পাখির বাংলা নামঃ মরিচা কপাল ডোরাডানা, ইংরেজি নামঃ রাস্টি ফ্রন্টেড বারউইং (Rusty-fronted Barwing), বৈজ্ঞানিক নামঃ Actinodura egertoni | এরা ‘লালমুখ দাগিডানা’ নামেও পরিচিত।

প্রজাতিটি দৈর্ঘ্যে ২২-২৪ সেন্টিমিটার। ওজন ৩৩-৩৮ গ্রাম। কপাল মরিচা লাল। মাথা ও ঝুঁটি ডার্ক-বাদামি। পিঠ পাটকিলে। ডানা পাটকিলের সঙ্গে সাদা-কালো মিশ্র ডোরাদাগ। লেজ পাটকিলে হলেও অগ্রভাগ কালচে, নিচের পালকের অগ্রভাগ সাদা। থুতনি মরিচা-লাল। দেহতল বাদামি-ধূসর। ঠোঁট খাটো হলদেটে ত্বক বর্ণ। পা ত্বক বর্ণের। স্ত্রী-পুরুষ পাখির চেহারায় তেমন কোনো পার্থক্য নেই।

প্রধান খাবারঃ পোকামাকড়, ফড়িং, বীজ, কচিপাতা। ছোট ফলের প্রতিও আসক্তি রয়েছে। প্রজনন মৌসুম এপ্রিল থেকে জুলাই। ভূমি থেকে ৬ মিটার উচ্চতার মধ্যে কাপ আকৃতির বাসা বাঁধে। বাসা বাঁধতে উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করে শুকনো ঘাস-লতা, শৈবাল, ফার্ন, শিকড় ইত্যাদি। ডিম পাড়ে ২-৪টি। ডিম ফুটতে কত দিন সময় লাগে সে তথ্য জানা যায়নি।

লেখকঃ আলম শাইন। কথাসাহিত্যিক, কলামলেখক, বন্যপ্রাণী বিশারদ ও পরিবেশবিদ।

Worlds Largest Bangla Birds Blog