দেশি সারস | Sarus Crane | Grus antigone

98
দেশি সারস
দেশি সারস | ছবি: ইন্টারনেট

দেশি এবং পরিযায়ী মিলিয়ে বাংলাদেশে বিচরণ করে প্রায় ৬৫০ প্রজাতির পাখি। এর মধ্যে সবচেয়ে উঁচুতম পাখি দেশি সারস । এদের উচ্চতা প্রায় এক মানুষ সমান। খাটো নয়, ছয় ফুটের কাছাকাছি উচ্চতার মানুষের সমান এদের উচ্চতা। এটি অতিবিরল দর্শন পরিযায়ী পাখি। কালেভদ্রে দেশের বিল-হাওরাঞ্চলে দেখা মেলে। দেশি সারস বিচরণ করে জলাশয়ের কাছাকাছি তৃণভূমি এবং শস্য খেতে। মাঝেমধ্যে হাঁটু পানিতে নেমে খাবার খুঁজতে দেখা যায়। খাদ্যের সন্ধানে বের হয় জোড়ায় অথবা ছোট-বড় দলে।

প্রজনন মৌসুমে পুরুষ পাখি স্ত্রী পাখিকে আকৃষ্ট করতে নাচের কসরত দেখায়। কসরত দেখতে দেখতে স্ত্রী পাখি নিজেকে ধরে রাখতে পারে না। নিজেও নাচে অংশ নিয়ে প্রেমে মজে যায়। এ সময় এরা জোরে জোরে দ্বৈত সংগীতের মতো গান গায়। প্রজাতির বৈশ্বিক বিস্তৃতি বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, নেপাল, পাকিস্তান, মিয়ানমার, চীন, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন, থাইল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার পূর্বাংশ পর্যন্ত। সমগ্র বিশ্বে এদের অবস্থান সন্তোষজনক নয় বলে আইইউসিএন লাল তালিকাভুক্ত করেছে। বাংলাদেশে সংকটাপন্ন বিপন্ন প্রজাতির তালিকায় রয়েছে দেশি সারস।

এ পাখির বাংলা নামঃ দেশি সারস, ইংরেজি নামঃ সারস ক্রেন (Sarus Crane)। বৈজ্ঞানিক নামঃ Grus antigone | দেশে তিন প্রজাতির সারস দেখা যায়। দেশি সারস, পাতি সারস ও ধূসর সারস।

আরো পড়ুন…
•ধূসর সারস
•পাতি সারস

এরা সবাই পরিযায়ী প্রজাতির। দৈর্ঘ্য কমবেশি ১৫০ থেকে ১৫৬ সেন্টিমিটার। ওজন প্রায় ৮ কেজি ৫০০ গ্রাম। স্ত্রী-পুরুষ দেখতে একই রকম। কপাল এবং মাথার তালুর পালক ধূসরাভ, যা দেখতে টুপির মতো। মাথার পেছন থেকে শুরু করে ঘাড় ও গলা উজ্জ্বল লাল রঙের মখমলের মতো চামড়ায় আবৃত। কানের অংশটুকু সাদা পালকে ঢাকা। লেজ সাদা। এ ছাড়া দেহের বাদবাকি পালক ধূসর রঙের। ঠোঁট সবুজাভ। চোখের তারা হলুদাভ। পা ও পায়ের পাতা লাল। অপ্রাপ্তবয়স্কদের চেহারা ভিন্ন।

প্রধান খাবারঃ শস্যবীজ, ঘাসবীজ, গাছের কচিডগা, ব্যাঙ, কীটপতঙ্গ। প্রজনন মৌসুম বর্ষাকাল। বাসা বাঁধে জলাশয়ের কাছাকাছি মাটির ওপরে। শুকনো চিকন ডালপালা, লতাপাতা উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করে। ডিম পাড়ে ১-২টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ২৬-৩৫ দিন।

লেখকঃ আলম শাইন। কথা সাহিত্যিক, কলাম লেখক, পাখি ও বন্যপ্রাণী বিশারদ এবং পরিবেশবিদ।

Worlds Largest Bangla Birds Blog