তিলা বাজ | Crested Serpent Eagle | Spilornis cheela

119
তিলা বাজ
তিলা বাজ | ছবি: ইন্টারনেট

তিলা বাজ স্থানীয় প্রজাতির পাখি। সুলভ থেকে অসুলভ দর্শন হয়ে পড়েছে। কয়েক দশক আগেও দেশে যত্রতত্র দেখা যেত। দেখা যেত রাস্তার পাশে টেলিফোনের তারে বা খুঁটিতে বসে থাকতে। হাওর-বাঁওড় কিংবা চা বাগান এলাকায়ও দেখা যেত। হালে নির্দিষ্ট এলাকা ছাড়া খুব কম নজরে পড়ে। তবে বড় দলটি এখনো সুন্দরবন অঞ্চলে দেখা যায়। এদের বৈশ্বিক বিস্তৃতি ভারত, শ্রীলঙ্কা, হিমালয়, দক্ষিণ-পূর্ব তিব্বত, দক্ষিণ-পূর্ব চীন, বালি ও ফিলিপাইন পর্যন্ত।

মূলত এরা শিকারি পাখি। বিচরণ করে একাকি কিংবা জোড়ায়। স্বভাবে হিংস্র। ঠোঁট এবং পায়ের নখ তীক্ষè-ধারালো। অনেক উঁচু থেকেও নিশানা ঠিক করতে পারে। মাছ কিংবা সাপ নাগালের মধ্যে পেলেই হলো, ঝপাৎ করে জলে ঝাঁপিয়ে পড়ে শিকারের পিঠে বড়শির মতো নখ বিঁধিয়ে শিকার কব্জা করে। অনেক সময় উড়তে উড়তেও শিকারে ঠোঁকর লাগায়। বেগতিক দেখলে গাছের ডালে বসে শিকারের মাথা ঠুঁকরিয়ে কাবু করে। এ থেকে রেহাই পায় না সাপও। অবশ্য সাপই এদের প্রধান খাবারের মধ্যে অন্যতম। এদের মাঝে মধ্যে উড়তে দেখা যায় দলবল নিয়ে। বেশিরভাগই শীতকালে দেখা যায় আকাশে ভেসে বেড়াতে। অনেক উঁচুতে উঠতে পারে। আকাশে ভাসতে ভাসতে ‘টি-ই, টি-ই, ঠি-ই’ সুরে ডাকতে থাকে।

পাখির বাংলা নামঃ তিলা বাজ, ইংরেজি নামঃ ক্রেস্টেড সারপেন্ট ঈগল, (Crested Serpent Eagleবৈজ্ঞানিক নামঃ Spilornis cheela | এরা ‘তিলা নাগঈগল’ নামেও পরিচিত।

আরো পড়ুন…
•ছোট তুর্কী বাজ •বেসরা বাজ •বড় বাজ •তুরমুতি বাজ
•লম্বা পা বাজপাখি •বাজপাখি •সাদাচোখ বিশিষ্ট বাজ •ছোট তুর্কী বাজ
•বড় বাজা •আগুনে বাজপাখি •পাতি শিকারি বাজ

দৈর্ঘ্য কম-বেশি ৬৫-৭৫ সেন্টিমিটার। মাথা, ঘাড় ও গলা কালো। ঘাড়ে ঝুঁটি আকৃতির পালক। যা শুধু ফোলালে বড় দেখায়। পিঠে গাঢ় বাদামির ওপর সাদা চিতি। ডানার বলয় কালো। দেহতলে হালকা বাদামির ওপর অসংখ্য ছোট চিতি। কালো লেজের নিচে সাদাডোরা। শিং কালো রঙের ঠোঁট, বড়শির মতো বাঁকানো। ঠোঁটের গোড়া থেকে চোখের বলয় পর্যন্ত উজ্জ্বল হলুদ। চোখের তারা হলুদ, মাঝখানে কালো। পা ও পায়ের পাতা হলদেটে।

প্রধান খাবারঃ সাপ, মাছ ও ব্যাঙ ইত্যাদি। প্রজনন মৌসুম ডিসেম্বর থেকে মার্চ। অঞ্চলভেদে ভিন্ন। জলাশয়ের কাছাকাছি গাছের উঁচু ডালে বাসা বাঁধে। উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করে চিকন ডালপালা। ডিম পাড়ে ১-২টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ৩৫ দিন। শাবক স্বাবলম্বী হতে সময় লাগে মাস দু’য়েক।

লেখকঃ আলম শাইন। কথা সাহিত্যিক, কলাম লেখক, পাখি ও বন্যপ্রাণী বিশারদ এবং পরিবেশবিদ।

Worlds Largest Bangla Birds Blog