পাহাড়ি তিতির | Rufous throated Partridge | Arborophila rufogularis

171
পাহাড়ি তিতির
পাহাড়ি তিতির | ছবি: উইকিপিডিয়া

পাহাড়ি তিতির বিরল দর্শন আবাসিক পাখি। দেশে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের চিরসবুজ বনে দেখা যাওয়ার নজির রয়েছে। সাধারণত এরা চিরসবুজ বনের আশপাশের জলাশয়ের কিনারে শিকার খুঁজে বেড়ায়। খুব ধীর লয়ে হেঁটে হেঁটে ঝরাপাতা উল্টিয়ে অথবা মাটিতে আঁচড় কেটে পোকামাকড় খুঁজে বের করে। বিচরণক্ষেত্রে বেশির ভাগই জোড়ায় জোড়ায় দেখা যায়। দলবদ্ধভাবে দেখা গেলেও খুব বেশিসংখ্যক সদস্য নিয়ে এরা দল বাঁধে না।

দল বাঁধে বড়জোর ৮-১০ সদস্য নিয়ে। উড়তে তেমন পারদর্শী নয়। বছরের বেশির ভাগ সময় চুপচাপ থাকলেও প্রজনন মৌসুমে এদের চেঁচামেচি বেড়ে যায় কিছুটা। এ সময় পালা করে পুরুষ পাখি গায় ‘হুইয়া-হু.. হুইয়া-হু’ সুরে। বাংলাদেশ ছাড়াও বৈশ্বিক বিস্তৃতি ভারত, নেপাল, ভুটান, চীন, মিয়ানমার, লাওস, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম পর্যন্ত। প্রজাতিটি বিশ্বে বিপস্মুক্ত। বাংলাদেশে অপ্রতুল তথ্য শ্রেণীতে রয়েছে। বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইনে প্রজাতিটি সংরক্ষিত।

পাখির বাংলা নামঃ পাহাড়ি তিতির, ইংরেজি নামঃ Rufous-throated Partridge বৈজ্ঞানিক নামঃ Arborophila rufogularis | এরা ‘লালগলা বাতাই’ নামেও পরিচিত।

আরো পড়ুন…
•বাদা তিতির
•ধূসর তিতির
•কালো তিতির

লম্বায় ২৭ সেন্টিমিটার। ওজন ৩৫৫ গ্রাম। স্ত্রী-পুরুষ পাখির চেহারায় সামান্য পার্থক্য রয়েছে। পুরুষ পাখির কপাল ধূসর। চাঁদিতে জলপাই-বাদামির ওপর কালো দাগ। ভ্রু ধূসর-সাদা। থুতনি ও গলায় লালচে গোলাপি রেখার ওপর কালো তিল। ঘাড় লালচে-কমলা। পিঠ সোনালী জলপাই-বাদামির মিশ্রণ। ঘাড়ের উপরের দিক ও বুকের মাঝখান বরাবর রয়েছে কালো ডোরা। বুক স্লেট ধূসর। কোমর থেকে লেজের নিচে কালো তিল। স্ত্রী পাখির থুতনি ও গলায় কালো তিল দেখা যায়। দেহের নিন্মাংশে রয়েছে অসংখ্য ফুটকি। উভয়ের চোখ বাদামি এবং পা লাল। অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখির দেহতল সাদা। কাঁধ ঢাকনি ডোরাহীন।

প্রধান খাবারঃ পোকামাকড়, শস্যবীজ, ছোট রসালো ফল, ঘাসের কচিডগা ইত্যাদি। প্রজনন মৌসুম এপ্রিল থেকে আগস্ট। ঝোপ জঙ্গলের ভেতর মাটির প্রাকৃতিক গর্তে ঘাস-লতা দিয়ে বাসা বাঁধে। ডিম পাড়ে ৩-৬টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ২০-২১ দিন।

লেখকঃ আলম শাইন। কথাসাহিত্যিক, কলামিস্ট ও বন্যপ্রাণী বিশারদ।

Worlds Largest Bangla Birds Blog