নদী টি-টি | River lapwing | Vanellus duvaucelii

209
নদী টি-টি
নদী টি টি | ছবি: ইন্টারনেট

নদী টি-টি লম্বা পায়ের এই পাখিটির বসবাস মূলত এশিয়া মহাদেশেই। তবে ভারত, বাংলাদেশ, মিয়ানমার, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ডেই এদের বেশি দেখা যায়। দেখতে রাগী রাগী মনে হলেও আসলে তত খারাপ নয়। স্বভাবে চঞ্চল। বলা যায়, একেবারেই অস্থিরমতি পাখি। কোথাও একদণ্ড দাঁড়িয়ে থাকার মতো সময় যেন ওদের নেই। সারাদিন দৌড় আর দৌড়। অকারণে কিন্তু দৌড়ায় না। পোকামাকড়ের সাড়া শব্দ পেলেই তবে দৌড়ে গিয়ে ধরতে চায়। এদের অন্য স্বভাবটি হচ্ছে ঘন ঘন পা ফেলে দৌড়ানো এবং দৌড়ানো অবস্থায় হঠাত্ থেমে যাওয়া। শরীরের তুলনায় পা বেশ লম্বা।

প্রজাতির অন্য সব টি-টি পাখিদের মতোই নদীর অববাহিকায় এবং পাথুরে এলাকায় বিচরণ করে এরা। স্যাঁতস্যাঁতে এলাকায় পোকামাকড়, কেঁচো খুঁজে বেড়ায়। ছোট দলে কিংবা একাকী বিচরণ করে এরা খাবারের সন্ধানে। সরাসরি জলে নামতে দেখা যায় না খুব একটা বরং কাদাজলে হাঁটু অবধি নেমে খাবার খুঁজে। শুকনো ঘেসো মাঠেও বিচরণ করে। তীক্ষ দৃষ্টি নিয়ে শিকার খোঁজে। সমুদ্র সৈকতেও এদের দেখা যায়। এই পাখির সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। ফলে আইইউসিএন প্রজাতিটিকে লাল তালিকাভুক্ত করেছে।

পাখিটির ইংরেজি নামঃ রিভার ল্যাপউইং, (River lapwing) | বৈজ্ঞানিক নামঃ Vanellus duvaucelii | এরা ‘বালুচরের টি-টি’ নামেও পরিচিত।

আরো পড়ুন…
•হলদেগাল টি-টি •ধূসর টি-টি
•সাদালেজি টি-টি •লাল লতিকা হট্টিটি

দৈর্ঘ্য কম-বেশি ২৯-৩২ সেন্টিমিটার। ওজন ১৪৩-১৮৫ গ্রাম। তুলনামূলকভাবে স্ত্রী পাখি খানিকটা বড়। মুখ, মাথা ও গলা কুচকুচে কালো। মাথা ঝুঁটি কালো। ঘাড় ধূসর-সাদা। পিঠ ও লেজ বাদামি। লেজের অগ্রভাগ কালো। ডানার কিনারে কালো-সাদা ছোপ। গলার নিচ থেকে বুক পর্যন্ত বাদামি। বুকের নিচ থেকে লেজতল পর্যন্ত সাদা। ঠোঁট ও চোখ কালো। পা লিকলিকে লম্বা, রঙ ময়লা-কালো।

প্রধান খাবারঃ পোকামাকড়, শুঁককীট, কেঁচো ও ফড়িং। প্রজনন মৌসুম মার্চ থেকে জুন। বাসা বাঁধে নদ-নদীর উপত্যকায় ভূমিতে ঘাস-লতা বিছিয়ে। ডিম পাড়ে ৩-৪টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ২১-২৪ দিন।

লেখকঃ আলম শাইন। কথাসাহিত্যিক, কলামিস্ট ও বন্যপ্রাণী বিশারদ।

Worlds Largest Bangla Birds Blog