নীলাভ গৃহবাসী আবাবিল | Asian House Martin | Delichon dasypus

367
নীলাভ গৃহবাসী আবাবিল
নীলাভ গৃহবাসী আবাবিল | ছবি: ইন্টারনেট

নীলাভ গৃহবাসী আবাবিল পরিযায়ী পাখি। শীতে দেখা মেলে। প্রাকৃতিক আবাসস্থল পাহাড়ি এলাকায় এবং সমুদ্রের উপকূলীয় এলাকায়। ভূপৃষ্ঠ থেকে ১৫০০ মিটার উঁচুতেও দেখা মেলে। পোকামাকড়ের আধিক্য যেখানে সে সব এলাকায় ঝাঁকে ঝাঁকে বিচরণ করে। আবার পত্র-পল্লবহীন গাছেও ঝাঁকে ঝাঁকে বসে বিশ্রাম নেয়। প্রজনন মুহূর্তে জোড়ায় জোড়ায় দেখা যায়। দূর-দূরান্ত থেকে ঠোঁট দিয়ে চেপে ধরে কাদামাটি বয়ে এনে বাসা বাঁধে। কণ্ঠস্বর শ্রুতিমধুর না হলেও বিরক্তিকর নয়। অস্থিরমতির পাখি। উড়ন্ত পতঙ্গ শিকার করে।

সবচেয়ে বিস্ময়কর হচ্ছে, এরা উড়ন্ত অবস্থায়ই জলপান করে। জলাশয়ের ওপর চক্কর মেরে স্থির হয়ে জল ঠোঁটে নিয়ে পান করে। বৈশ্বিক বিস্তৃতি দক্ষিণ-পূর্ব বাংলাদেশ, উত্তর-পূর্ব ভারত, নেপাল, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, তিব্বত, আফগানিস্তান, সাইবেরিয়া, ফিলিপাইন, জাপান, তাইওয়ান, কোরিয়া, সুমাত্রা ও সংযুক্ত আরব আমিরাত পর্যন্ত। বিশ্বে প্রজাতিটি হুমকি নয়।

পাখির বাংলা নামঃ নীলাভ গৃহবাসী আবাবিল, ইংরেজি নামঃ এশিয়ান হাউস মার্টিন (Asian House Martin) | বৈজ্ঞানিক নামঃ Delichon dasypus | এরা ‘এশীয় ঘরনাকুটি’ নামেও পরিচিত।

আরও পড়ুন…
•লালকোমকর আবাবিল •তারলেজা আবাবিল •ডোরা আবাবিল
•ডোরাগলা আবাবিল •ধূসর আবাবিল •আবাবিল

প্রজাতির গড় দৈর্ঘ্য ১২-১৩ সেন্টিমিটার। ওজন ১৪ গ্রাম। স্ত্রী-পুরুষের চেহারায় সামান্য পার্থক্য রয়েছে। মাথা, ঘাড় ও পিঠ ও গাঢ় নীল। ডানা এবং লেজ কালো-বাদামি। লম্বা ডানা লেজের প্রান্তে মিশেছে। লেজ মাছের লেজের মতো চেরা। গলা থেকে লেজতল পর্যন্ত সাদা। চোখ বাদামি। ঠোঁট খাটো, ধূসর-কালো। পা ও পায়ের পাতা সাদা পালকে আবৃত। যুবাদের রং ভিন্ন।

প্রধান খাবারঃ উড়ন্ত পোকামাকড়। বিশেষ করে মাছি এদের খুব প্রিয় খাবার। প্রজনন মৌসুম অক্টোবর। অঞ্চলভেদে প্রজনন মৌসুমের হেরফের রয়েছে। পুরনো দরদালানের ফাঁকফোকরে কাদা মাটি দিয়ে বাসা বাঁধে। ডিম পাড়ে ৩-৪টি। ফোটে ১৪-১৬ দিনে।

লেখকঃ আলম শাইন। কথাসাহিত্যিক, কলামিস্ট ও বন্যপ্রাণী বিশারদ।