এশীয় তালবাতাসি । Asian Palm Swift । Cypsiurus balasiensis

98
Asian-Palm-Swift
এশীয় তালবাতাসি | ছবি: ইন্টারনেট

সুলভ দর্শন, স্থানীয় প্রজাতির পাখি। দেখতে হিংস মনে হলেও তত হিংস নয়। কেবল আক্রান্ত হলে আক্রমণ করে। মানুষের হাতে বন্দি হলে ঠোঁট এবং নখের আঁচড়ে জখম করে। উড়ন্ত অবস্থায় এদের ঠোঁট, মাথা ও লেজ সমান্তরাল থাকে। ফলে দূর থেকে মাথা এবং লেজ শনাক্ত করা কঠিন হয়। শুধুমাত্র উড়ে সামনে অগ্রসর হওয়ার কারণে মাথা-লেজ শনাক্ত করা যায়। শরীরের তুলনায় ডানা লম্বা থাকার কারণে উড়ন্ত অবস্থায় ডানা নিচের দিকে ঝুলে পড়ে।

অবাক করা বিষয় হচ্ছে এরা উড়ন্ত অবস্থায় জল পান করে। গাছে জমে থাকা অথবা জলাধারের জল পানকালীন স্থির উড়তে থাকে। কণ্ঠস্বর কর্কশ, কিচিরমিচির শোনায়। বেশিরভাগই তালগাছে আশ্রয় নেয়। বাসাও বাঁধে তাল পাতায়। মাঝেমধ্যে সুপারি পাতায়ও বাসা বাঁধে। তাল পাতার সঙ্গে লেপ্টে রাত কাটায়। বৈশ্বিক বিস্তৃতি এশীয় অঞ্চল পর্যন্ত। ছোট-বড় দলে বিচরণ করে। মাঝেমধ্যে জোড়ায়ও দেখা যায়। প্রজাতি বিশ্বব্যাপী হুমকি নয়।

পাখির বাংলা নামঃ এশীয় তালবাতাসি, ইংরেজি নামঃ এশিয়ান প্লাম সুইফট (Asian Palm Swift), বৈজ্ঞানিক নামঃ Cypsiurus balasiensis। এরা ‘নাককাটি’ নামেও পরিচিত।

প্রজাতির দৈর্ঘ্যে ১১-১৩ সেন্টিমিটার। ওজন ৮-১০ গ্রাম। স্ত্রী-পুরুষ পাখির চেহারা অভিন্ন। মাথা কালচে বাদামি, পিঠ গাঢ় নীল বাদামি। মধ্যখানে সাদা ছোপ। ডানার প্রান্তপালক কালচে ধূসর। ডানা দীর্ঘ, লেজের কাছাকাছি ঠেকেছে। লেজ লম্বা, বাদামি। লেজ প্রান্তর মাছের লেজের মতো ছেঁড়া। গলা ধূসরাভ বাদামি। দেহতল সাদা। ঠোঁট কালো, ছোট। ঠোঁটের অগ্রভাগ কিঞ্চিত বাঁকানো। পা ছোট। পায়ের তুলনায় নখ বড় এবং ধারালো।

প্রধান খাবারঃ উড়ন্ত পোকামাকড়। প্রজনন মৌসুম মার্চ থেকে আগস্ট। ভারতের পাহাড়ি অঞ্চলে এপ্রিল থেকে জুন। বাসা বাঁধে তাল গাছের পাতায়। ডিম পাড়ে ৩-৫টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ১৫-১৭ দিন।

লেখকঃ আলম শাইন।কথাসাহিত্যিক, কলামলেখক, বন্যপ্রাণী বিশারদ ও পরিবেশবিদ।

Worlds Largest Bangla Birds Blog