বড় মদনটাক | Greater Adjutant | Leptoptilos dubius

726
Greater-Adjutant
বড় মদনটাক | ছবিঃ ইবার্ড

বিরল প্রজাতির পাখি ‘বড় মদনটাক’। দেখতে বিশাল দর্শন ভয়ঙ্কর মনে হলেও আসলেই নিরীহ প্রজাতির পাখি। স্বভাবে অহঙ্কারী। হাঁটে এক পা দু’ পা ফেলে, বসে হাঁটু ভাঁজ করে। জলাশয়ের আশপাশে বিচরণ করে। বাংলাদেশে কালেভদ্রে দেখা মেলে। উনিশ শতকের গোড়ার দিকে স্থানীয় প্রজাতি হিসেবে পরিচিত ছিল। দেশের উত্তরাঞ্চলে নাকি এক সময় দেখাও যেত। হালে সে রকম নজির নেই। বাংলাদেশ ছাড়া বৈশ্বিক বিস্তৃতি ভারত, মিয়ানমারসহ দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চল। বিশ্বে এদের অবস্থান মোটেই সন্তোষজনক নয় বিধায় আইইউসিএন প্রজাতিটিকে বিপদগ্রস্ত বলে ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইনে এরা সংরক্ষিত।

পাখির বাংলা নামঃ বড় মদনটাক, ইংরেজি নামঃ গ্রেটার অ্যাডজুট্যান্ট (Greater Adjutant), বৈজ্ঞানিক নামঃ Leptoptilos dubius | এরা ‘হাড়গিলা’ নামেও পরিচিত।

দৈর্ঘ্য কমবেশি ১৫০ সেন্টিমিটার। স্ত্রী-পুরুষ দেখতে একই রকম। উভয়ের মাথায় টাক। মাথায় গোলাপি রঙের চামড়ায় আবৃত। তার ওপর অল্প ক’টি পশম আকৃতির পালক। ঘাড়-গলা পালকশূন্য। গলা লালচে-হলুদ রঙের, ঘাড় কমলা-লালচে। ঘাড়ে রয়েছে এক ধরনের হলুদাভ-কমলা রঙের থলে। যা ঝুলে পড়ে বুকের ওপর পর্যন্ত। প্রজনন পালক ভিন্ন। প্রজননের বাইরে পিঠের পালক কালচে-ধূসর। বুক, পেট এবং ডানার নিচের দিক সাদাটে। লেজ কালচে। চোখের তারা হলুদাভ। ঠোঁট ত্রিকোণাকৃতির। ঠোঁটের গোড়া কালচে, বাদবাকি ফিকে হলুদ।

প্রধান খাবারঃ মাছ, ব্যাঙ, ছোট পাখি, ইঁদুর, সাপসহ সব ধরনের ছোট সরীসৃপ। প্রজনন মৌসুম সেপ্টেম্বর থেকে জানুয়ারি। জলাশয়ের কাছাকাছি গাছের উঁচুতে শুকনো সরু ডালপালা দিয়ে মাচা আকৃতির বাসা বাঁধে। ডিম পাড়ে ৩-৪টি। ডিম ফুটতে সময় ৩৫ দিনের মতো।

লেখকঃ আলম শাইন। কথাসাহিত্যিক, কলাম লেখক, বন্যপ্রাণী বিশারদ ও পরিবেশবিদ।