লালঘাড় পেঙ্গা | Rufous necked Laughingthrush | Garrulax ruficollis

212
লালঘাড় পেঙ্গা
লালঘাড় পেঙ্গা | ছবি: ইন্টারনেট

লালঘাড় পেঙ্গা পাখি স্থানীয় প্রজাতির। তবে যত্রতত্র দেখা যায় না। ভিতু প্রকৃতির। এদের আবাসস্থল ক্রান্তীয় আর্দ্র নিম্ন ভূমির বন এবং ক্রান্তীয় আর্দ্র পার্বত্য অরণ্যে। এ পাখিকে বাঁশঝাড় কিংবা ঝোপ-জঙ্গলে বেশি দেখা যায়। বিশেষ করে চওড়া পাতার আড়ালে লুকিয়ে থাকতে পছন্দ করে। ফাঁকা স্থানে তেমন একটা দেখা যায় না। বাস করে দলবদ্ধভাবে। দলে কমপক্ষে ২৫-৩০টি পাখি একত্রে বিচরণ করে। মানুষ শত্রু না হলেও অদৃশ্য কারণে এরা ভীষণ ভয় পায়।

মানুষের আনাগোনা টের পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পাতার আড়ালে লুকিয়ে পড়ে। নিমেষেই দল বেঁধে চুপ মেরে যায়। ওদের অবস্থান নিশ্চিত করা কষ্টসাধ্য। প্রজাতির পুরুষদের চরিত্র তত সুবিধাজনক নয়। বহুগামীতার প্রমাণ মেলে। নিজ স্ত্রী ছাড়াও পর স্ত্রীর সেবা গ্রহণ করতে দেখা যায়। অর্থাৎ একাধিক স্ত্রী পাখি পুরুষ পাখিকে ঘিরে শরীর চুলকে দেয়। ওরা আরাম পেয়ে চুপচাপ বসে থাকে। সেই সঙ্গে প্রজননকর্মও সেরে নেয়। স্বভাবে খানিকটা ঝগড়াটে হলেও ভিতু প্রকৃতির এরা। কণ্ঠস্বর তত ভালো নয়, দ্রুত গান গায়। ফলে সুর শুনতে আগ্রহ সৃষ্টি হয় না। এশিয়ার অনেক দেশেই এদের সাক্ষাৎ মেলে। বাংলাদেশ ছাড়া এদের বৈশ্বিক বিস্তৃতি ভারত, নেপাল, ভুটান, মিয়ানমার ও চীন পর্যন্ত। বিশ্বে এদের অবস্থান মোটামুটি সন্তোষজনক।

পাখির বাংলা নামঃ লালঘাড় পেঙ্গা । ইংরেজি নামঃ রুপাস-নেকেড লাফিং থ্রাস, (Rufous-necked Laughingthrush) । বৈজ্ঞানিক নামঃ Garrulax ruficollis ।

আরো পড়ুন…
•বড় পেঙ্গা •সাদা মুকুট পেঙ্গা •হলদেগলা পেঙ্গা

‘লালঘাড় পেঙ্গা’ পাখির দৈর্ঘ্য ২২-২৭ সেন্টিমিটার। ওজন ৫১-৭৩ গ্রাম। কপাল, গলা ও বুকের কিছু অংশ কুচকুচে কালো। মাথা ঘাড় ধূসর। ঘাড় লাল। পিঠ জলপাই-বাদামি। লেজ কালচে। বুকের নিচ থেকে পেট পর্যন্ত গাঢ় বাদামি। লেজের তলা লাল। ঠোঁট কালো। চোখ রক্ত লাল। পা ধূসর কালো।

প্রধান খাবার: ছোট শামুক, কীটপতঙ্গ। ছোট ফলের প্রতিও আসক্তি রয়েছে। এদের প্রজনন সময় মার্চ থেকে আগস্ট। বাসা বাঁধে ভূমি থেকে দেড়-দুই মিটার উচ্চতায় ঝোপের ভিতর। উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করে বাঁশপাতা, ঘাস, শিকড়, আগাছা ইত্যাদি। ডিম পাড়ে ৩-৪টি। ফুটতে সময় লাগে ১৫-১৭ দিন।

লেখকঃ আলম শাইন। কথাসাহিত্যিক, কলামিস্ট ও বন্যপ্রাণী বিশারদ।

Worlds Largest Bangla Birds Blog