আগুনে লালগলা | Firethroat | Luscinia pectardens

229
আগুনে লালগলা
আগুনে লালগলা | ছবি: ইন্টারনেট

আগুনে লালগলা পরিযায়ী প্রজাতির হলেও আগমন সময়সূচির হেরফের রয়েছে। তবে উত্তর-পূর্ব ভারত এবং বাংলাদেশের পাহাড়ি অঞ্চলে শীতকালে দেখা যাওয়ার নজির রয়েছে। পুরুষ পাখি আকর্ষণীয় রূপ ধারণ করে প্রজনন মৌসুমে। এ সময় গলা টকটকে লাল এবং সমস্ত শরীরের পালক উজ্জ্বল দেখায়। প্রজনন বাইরে অনেকখানি নিষ্প্রভ দেখায় পুরুষ পাখিকে। স্ত্রী পাখির চেহারা তত আকর্ষণীয় নয়। পুরুষের তুলনায় অনেকটাই নিষ্প্রভ।

বিচরণ করে একাকি কিংবা জোড়ায়। ভূ-চর পাখি। পাহাড়ি এলাকার বাঁশবনে কিংবা লতাগুল্ম এলাকার বনতলে পোকামাকড় খুঁজে বেড়ায়। নিয়মিত গোসল করে। শরীর শুকাতে গিয়ে বনতলের শুকনো পাতায় গড়াগড়ি খায়। হঠাত্ দেখলে মনে হতে পারে বুঝি পাখিটি বিপদগ্রস্ত হয়ে মারা যাচ্ছে। কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকলে ভুল ভেঙ্গে যাবে। গানের গলা দারুণ। শুষ্ককণ্ঠে গান গায় ‘ট্রিলিস..ট্রিলিস. .ট্রিলিস….’ সুরে। বৈশ্বিক বিস্তৃতি বাংলাদেশ ছাড়া ভারতের অরুণাচল, মেঘালয়, উত্তর মিয়ানমার, চীন (পশ্চিম সিচুয়ান ও উত্তর-পূর্ব ইউনান) দক্ষিণ-পূর্ব তিব্বত পর্যন্ত। প্রজাতিটি বিশ্বে বিপদমুক্ত হলেও বাংলাদেশে বিচরণ সন্তোষজনক নয়।

বাংলা নামঃ আগুনে-লালগলা, ইংরেজি নামঃ ফায়ারথ্রোট’(Firethroat), বৈজ্ঞানিক নামঃ Luscinia pectardens | এরা ‘লালগলা ফিদ্দা’ নামেও পরিচিত।

আরো পড়ুন…
•লাল ফিদ্দা •সাদাকালো ফিদ্দা •ধূসরাভ ফিদ্দা
•কালো ফিদ্দা •সাদালেজ ফিদ্দা •মরুর ফিদ্দা

দৈর্ঘ্য কমবেশি ১৪ সেন্টিমিটার। স্ত্রী-পুরুষ পাখির রঙ ভিন্ন। পুরুষ পাখির প্রজননকালীন সময়ে মাথা, ঘাড় ও পিঠ উজ্জ্বল নীলাভ রঙ ধারণ করে। পিঠের মাঝামাঝি গিয়ে ঠেকে ডানার বাদামি-কালো রঙের পালকগুলো। ফলে দূর থেকে মনে হতে পারে পিঠের শেষদিকের পালকগুলো বাদামি-কালো রঙের। লেজ স্লেটকালো। গলার রঙ টকটকে লাল। চওড়া নীলাভ কালো বর্ণ চোখের দু’পাশ দিয়ে গড়িয়ে বুকের দিকে গিয়ে নামে। বুকের রঙ লালচে সাদা। প্রজননের বাইরে পুরুষ পাখির মাথা, ঘাড় ও পিঠ অন্ধকার নীল। গলা অনুজ্জ্বল কমলা। অপরদিকে স্ত্রী পাখির মুখ জলপাই বাদামি। পিঠ অন্ধকার নীলাভ। লেজ স্লেটকালো, দু-একটি পালকে সাদা টান। গলা, বুক ও পেট হলদে-বাদামি। উভয়ের ঠোঁট ও চোখ কালো। পুরুষ পাখির পা নীলচে কালো। স্ত্রী পাখির পা নীলচে বেগুনি।

প্রধান খাবারঃ বনতলের পোকামাকড়। প্রজনন তথ্য অদ্যাবধি জানা যায়নি।

লেখকঃ আলম শাইন। কথাসাহিত্যিক, কলামিস্ট ও বন্যপ্রাণী বিশারদ।