বাদামি কসাই পরিযায়ী পাখি। শীতে বাংলাদেশ ছাড়াও উপমহাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এদের দেখা মেলে। প্রচন্ড শীতে এশিয়ার আলতাই পর্বত থেকে সাইবেরিয়া ট্রান্স-বৈকালিয়া, আমুর, পূর্ব চীন ও জাপান থেকে এরা বলে আসে আমাদের উষ্ণ অঞ্চলে। স্বভাবে চঞ্চল, তবে খানিকটা লাজুক। পারতপক্ষে মানুষের ধারে কাছে সহজে ভিড়তে চায় না। আবার ওদের কাছেও অন্য জাতের পাখি ঘেঁষার সুযোগ পায় না। তাড়িয়ে দেয়।
‘খ্যাঁক্-খ্যাঁক্-খ্যাঁক্-খ্যাঁক্-‘ ধরনের কর্কশ আওয়াজ করে অন্যদেরকে ভয় পাইয়ে দেয়। ওদের আচরণ ওই সময়েই একটু বেখাপ্পা ঠেকে। উগ্র আচরণের জন্যই বোধকরি এ প্রজাতির বাংলা নামকরণ করা হয় ‘কসাই পাখি’। বাংলাদেশে প্রায় ৬ ধরনের কসাই পাখির সাক্ষাত্ পাওয়া যায়। এর মাত্র একটি প্রজাতি দেশের স্থায়ী বাসিন্দা, বাকিরা পরিযায়ী।
পাখির বাংলা নামঃ বাদামি কসাই, ইংরেজি নামঃ ব্রাউন শ্রাইক, (Brown Shrike), বৈজ্ঞানিক নামঃ (Lanius cristatus) গোত্রের নামঃ লানিআইদি । এরা ‘কাজল পাখি’ ও ‘খয়রা লাটোরা’ নামেও পরিচিত।
আরো পড়ুন…
•ধূসর কসাই
লম্বায় ১৯ সেন্টিমিটার। মাথা ও ঘাড় ধূসর-বাদামি। চোখের ওপর কালো কাজল টানা, যা মিশেছে কানের ওপরের পালকের সঙ্গে। পিঠ বাদামি। ডানা গাঢ় বাদামি। ডানার প্রান্ত কালো। ডানার তলার পালক সাদা। গলা ও বুক সাদা। বুকের নিচ থেকে লালচে-কমলার আভা দেখা যায়। লেজ লম্বা, মোটা থেকে ক্রমান্বয়ে সরু হয়েছে। ঠোঁট শিঙে বর্ণ। পা নীলচে ধূসর। স্ত্রী পাখির বুকের দিকে আঁশালো পালক থাকে।
প্রধান খাবারঃ উড়ন্ত পোকামাকড়। প্রজনন সময় এপ্রিল থেকে জুন। নিজ বাসভূমে বাসা বাঁধে। ডিম পাড়ে ৪-৬টি।
লেখকঃ আলম শাইন। কথাসাহিত্যিক, কলামিস্ট ও বন্যপ্রাণী বিশারদ।