বন খঞ্জন | Forest Wagtail | Dendronanthus indicus

210
বন খঞ্জন
বন খঞ্জন | ছবি: ইন্টারনেট

বন খঞ্জন হিংসুটে কিংবা ঝগড়াটে নয়। বিচরণ করে একাকী। এরা পরিযায়ী পাখি। শীত শুরু হওয়ার আগেই উপমহাদেশে চলে আসে। থেকে যায় গ্রীষ্মের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত। অন্যসব খঞ্জন সাধারণত মাঠ-প্রান্তরে বিচরণ করলেও এরা বনে জঙ্গলে বেশি বিচরণ করে। তুলনামূলকভাবে ফাঁকা জঙ্গল এদের পছন্দ।

বাংলা নামঃ বনখঞ্জন,  ইংরেজি নামঃ ফরেস্ট ওয়াগটেল, (Forest Wagtail), বৈজ্ঞানিক নামঃ Dendronanthus indicus |

আরো পড়ুন…
•ধূসর খঞ্জন •হলদেমাথা খঞ্জন •সাদা খঞ্জন

এরা লম্বায় ১৬-১৮ সেন্টিমিটার। ঘাড়ের দুপাশ জলপাই রঙা। বুক ও পেট সাদা। তার ওপর চওড়া কালো দুটি দাগ। ডানার প্রান্তের পালক ময়লা হলুদ। লেজ পাটকিলে কালো। তবে লেজের দুপাশের পালক সাদা। শরীরের তুলনায় লেজটা বড়। চোখ দুটো বেশ মায়াবী। চোখের ওপরে সাদা বাঁকানো টান। পা হালকা গোলাপি। স্ত্রী-পুরুষ দেখতে প্রায় একই রকম। সব ধরনের খঞ্জনই দেখতে সুন্দর। সে তুলনায় বনখঞ্জন একটু নিষ্প্রভ। তবে চেহারাটা মায়াবী।

সাধারণত আমাদের দেশে প্রায় আট প্রজাতির খঞ্জন দেখা যায়। বনখঞ্জন, সাদা খঞ্জন, বড় পাকড়া খঞ্জন, পাকড়া খঞ্জন, ধূসর খঞ্জন, হলুদ খঞ্জন, হলদে মাথা খঞ্জন, কালো মাথা খঞ্জন। বড় পাকড়া খঞ্জন ছাড়া অন্যরা পরিযায়ী হয়ে আসে। কয়েক প্রজাতি এ দেশে ডিম বাচ্চাও ফোটায়। সব ধরনের খঞ্জনই চঞ্চল প্রকৃতির। স্থিরতা এদের মাঝে নেই বললেই চলে। নাচের ভঙ্গিতে লেজ দোলাতে থাকে সর্বক্ষণ। অবশ্য কোমরের গড়ন ভিন্নতার কারণে কোমরটা সারাক্ষণ কাঁপতে থাকে। ফলে মনে হয় এরা বুঝি সারাদিন নেচে বেড়ায়। প্রকৃতপক্ষে তা নয়।

প্রধান খাবারঃ পোকামাকড়। বনখঞ্জনরাও তদ্রুপ বনপ্রান্তরে ঘুরে ঘুরে পোকামাকড় খেয়ে থাকে। প্রজনন সময় মে-জুলাই। বাসা বাঁধে ঘাসবনে অথবা গাছের গোড়ার খোঁদলে। উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করে শুকনো ঘাস, নরম লতাপতা। বাসার আকৃতি লম্বাটে। ডিমের সংখ্যা ২-৫টি। ডিম ফুটতে সময় নেয় ১৭-১৯ দিন।

লেখকঃ আলম শাইন। কথা সাহিত্যিক, কলাম লেখক, পাখি ও বন্যপ্রাণী বিশারদ এবং পরিবেশবিদ।

Worlds Largest Bangla Birds Blog