ভেকঠোঁটি রাতচরা | Hodgsons Frogmouth | Batrachostomus hodgsoni

81
Hodgsons-Frogmouth
ভেকঠোঁটি রাতচরা | ছবি: ইন্টারনেট

স্থানীয় প্রজাতির হলেও বিরল দর্শন ‘ভেকঠোঁটি রাতচরা’। বিচরণ করে সমুদ্র পৃষ্ট থেকে ৩০০-১৯০০ মিটার উচ্চতার পাহাড় কিংবা ক্রান্তীয় চিরহরিৎ বনে। এ ছাড়া মিশ্র চিরসবুজ বনে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশে খুব একটা দেখার নজির নেই। আমাদের পূর্বসূরি পাখি বিশারদের তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, এক সময় মধুপুর বনে এদের বিচরণ ছিল। তবে খুব বেশি দেখার তথ্য নেই। প্রজাতিটি দেখতে কুৎসিত, ভয়ঙ্কর চেহারার। মূলত এদের মুখের গঠন অনেকটাই ব্যাঙ আকৃতির। নামকরণেও সে রকমটি ইঙ্গিত পাওয়া যায়।

প্রজাতির দেহের বর্ণের সঙ্গে গাছের মরা ডালপালা কিংবা শুকনো লতা-পাতার যথেষ্ট মিল রয়েছে। যার ফলে দিনের বেলায় প্রাকৃতিক পরিবেশে লুকিয়ে থাকলেও খুঁজে বের করা মুশকিল। এরা নিশাচর পাখি। দিনের বেলায় ঘুমিয়ে কাটায়। রাতের আঁধার নেমে এলে কেবল শিকারে বের হয়। বেশির ভাগ একাকী শিকারে বের হয়। উড়ন্ত পোকামাকড় দেখলে ছোঁ মেরে মুখে পুরে ফেলে। প্রিয় পাঠক, ‘রাতচরা’ বা ‘নাইটজার’ প্রজাতির পাখির চেহারায় তত আকর্ষণ নেই। অনেকে এদের পেঁচা বলে ভুল করে থাকেন। আসলে এরা পেঁচাদের স্বজন নয়। আমাদের দেশে মোট পাঁচ প্রজাতির রাতচরা পাখি দেখা গেলেও ব্যাঙমুখো প্রজাতির পাখি শুধু এরাই। পর্যায়ক্রমে আমরা রাতচরা প্রজাতির অন্যদের নিয়েও লেখার চেষ্টা করব। প্রজাতিটি বিশ্বে বিপদমুক্ত হলেও বাংলাদেশে বিরল দর্শন হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।

পাখির বাংলা নামঃ ভেকঠোঁটি রাতচরা, ইংরেজি নামঃ হজসন’স ফ্রগমাউথ, (Hodgson’s Frogmouth), বৈজ্ঞানিক নামঃ Batrachostomus hodgsoni | এরা ‘হজসনি ব্যাঙমুখো’ নামেও পরিচিত।

লম্বায় ২৬-২৮ সেন্টিমিটার। স্ত্রী-পুরুষ পাখির মধ্যে সামান্য পার্থক্য রয়েছে। পুরুষ পাখির ঘাড় এবং গলায় সাদা ফোঁটা। পিঠ ধূসরাভ-বাদামি। পেটের দিকে এলোমেলো সাদা। লেজের ওপর ধূসর বলয়। অন্যদিকে স্ত্রী পাখির ঘাড়ে সাদা ফোঁটা। পিঠ গাঢ় লালচে-বাদামি। পেটে অসংখ্য সাদা ফোঁটা। দেহের অন্যত্র দাগ বা ফোঁটা নেই। উভয়ের ডানা খাটো, লেজ লম্বা এবং মুখ-মাথায় সামান্য লোম দেখা যায়। চোখ বাদামি। ঠোঁট বাদামি-কালচে।

প্রধান খাবারঃ উড়ন্ত পতঙ্গ বা পোকামাকড়। প্রজনন মৌসুম এপ্রিল থেকে জুলাই। অঞ্চলভেদে প্রজনন মৌসুমের হেরফের দেখা যায়। বাসা বাঁধে গাছের ডালে। ডিম পাড়ে ১-৩টি।

লেখকঃ আলম শাইন। কথাসাহিত্যিক, কলাম লেখক, বন্যপ্রাণী বিশারদ ও পরিবেশবিদ।

Worlds Largest Bangla Birds Blog