ছোট মাছরাঙা | Common Kingfisher | Alcedo atthis

161
ছোট মাছরাঙা
ছোট মাছরাঙা | ছবি: তৌহিদ পারভেজ বিপ্লব

ছোট মাছরাঙা ভাবভঙ্গি দেখে খানিকটা হিংস্র মনে হলেও এরা শান্ত-স্বভাবের পাখি। অন্য জাতের পাখির সঙ্গে এরা সাধারণত ঝগড়া-বিবাদে লিপ্ত হয় না। নিজেরাও ঝগড়া-বিবাদ করে না। দেশের সর্বত্র দেখা যায়। জলাশয়ের আশপাশে ঘোরা ফেরা করে। শিকারের আশায় এরা সূর্যটাকে পেছনে রেখে জলার ধারে চুপচাপ বসে থাকে। মাছের দেখা পেলে শূন্যে ডানা ঝাপটিয়ে ঝপাত্ করে পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়ে। শিকার ঠোঁট দিয়ে চেপে ধরে পুনরায় একই স্থানে এসে বসে। জ্যান্ত মাছটাকে গাছের ডালে আছড়ে মেরে গিলে খায়।

স্ত্রী-পুরুষ পাখি কাছাকাছি থেকেই শিকার খোঁজে। কিছুটা দূরত্ব বজায় থাকলেও ‘চিঁ-চিঁ-চিঁ-ই’ স্বরে ডেকে ভাবের আদান-প্রদান করে। এ পাখি গ্রামের দুষ্ট ছেলেদের প্রধান টার্গেট। নানাভাবেই ওরা অত্যাচার করে। বিশেষ করে গুলতি দিয়ে এ পাখি শিকার করে তারা। গাছের কোঠর থেকেও এদের বাচ্চা, ডিম চুরি করতেও ছাড়ে না তারা।

এ পাখির বাংলা নামঃ ছোট মাছরাঙা, ইংরেজি নামঃ কমন কিংফিশার, (Common Kingfisher), বৈজ্ঞানিক নামঃ Alcedo atthis, গোত্রের নামঃ আলসেডিনিদি ।

আরো পড়ুন…
•বাদামি মাছরাঙা •মেঘহও মাছরাঙা •ঝুঁটিয়াল মাছরাঙা
•কালোটুপি মাছরাঙা •ব্লাইথের ছোট মাছরাঙা •ধলাগলা মাছরাঙা
•নীলকান মাছরাঙা •লাল মাছরাঙা •পাকড়া মাছরাঙা

লম্বায় ১৮-২০ সেন্টিমিটার। মাথা ও ঘাড়ের ওপর ফিরোজা বর্ণের চিতি। ঘাড়ের পাশে সাদা রেখা। দেহের উপরাংশ সবুজাভ-নীল। পিঠের মাঝ থেকে লেজের ওপর পর্যন্ত ফিরোজা রেখা। ডানার দু’পাশে রয়েছে ফিরোজা চিতি। গলা সাদা। নিচের অংশ লালচে-কমলা। পা টকটকে লাল। নখ ছাই বর্ণের। চোখের মণি গাঢ় বাদামি। ঠোঁট কালো। স্ত্রী পাখির ঠোঁটের গোড়া ফিকে লাল। এছাড়া স্ত্রী-পুরুষ পাখির মধ্যে পার্থক্য তেমন একটা নেই।

প্রধান খাবারঃ ছোট মাছ। এছাড়া ব্যাঙাচি ও জলজ কীট খেতে দেখা যায়। প্রজনন সময় ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে জুনের মাঝামাঝি পর্যন্ত। এছাড়াও বছরের যে কোন সময়েও মাছরাঙা ডিম-বাচ্চা ফোটায়। জলাশয়ের খাড়া পাড়ে বা পুরনো গাছের কোঠরে বাসা বাঁধে। ডিম পাড়ে ২-৪টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ১৯-২০ দিন। বাচ্চা উড়তে শেখে ২০-২৫ দিনে। নিরাপদ মনে হলে এক স্থানে বছরের পর বছর বাসা বাঁধে।

লেখকঃ আলম শাইন। কথাসাহিত্যিক, কলাম লেখক, বন্যপ্রাণী বিশারদ ও পরিবেশবিদ।

Worlds Largest Bangla Birds Blog