মেটেমাথা কাঠকুড়ালি | Grey headed woodpecker | Picus canns

313
মেটেমাথা কাঠকুড়ালি
মেটেমাথা কাঠকুড়ালি | ছবিঃ উইকিপিডিয়া

মেটেমাথা কাঠকুড়ালি পাতাঝরা বনে দেখা মেলে। দেখা মেলে প্যারাবনের গাছ-গাছালিতেও। দেশে সুলভ দর্শন। বিশেষ করে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও খুলনা বিভাগের বনাঞ্চলে দেখা যায়। শুধু বাংলাদেশেই নয়, এদের বিস্তৃতি ইউরোপ থেকে শুরু করে চীন, হিমালয় অঞ্চল, সাইবেরিয়ার দক্ষিণাঞ্চল, পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া পর্যন্ত। প্রজাতিটি বিশ্বে বিপদমুক্ত। এরা একাকী বিচরণ করতে পছন্দ করে। একাকী বিচরণ করলেও অনেক সময় জোড়ের পাখিটিকে অদূরেই দেখা যায়। কর্মব্যস্ততার মধ্য দিয়ে দিন কাটায়।

গাছের মরা বাকল নজরে পড়লেই ঠোঁট ঢুকিয়ে খাবার খুঁজতে থাকে। নিরাপদ মনে হলেই কেবল মাটিতে নামে। উইঢিবির খোঁজ পেলে ঠোঁট ঢুকিয়ে খাবার খোঁজে। কর্মব্যস্ততার ফাঁকে উচ্চকণ্ঠে ডাকে, ‘পিক, পিক, পিক, পিক…’ সুরে। প্রজনন মৌসুমে গাছের মরা ডাল দেখলে ফাঁপাস্থান নির্বাচনের জন্য ঠোঁট দিয়ে পিটিয়ে ড্রাম বাজানোর মতো শব্দ করে। জায়গাটা পছন্দ হলে গর্ত খুঁড়ে বাসা বানায়।

পাখির বাংলা নামঃ মেটেমাথা কাঠকুড়ালি, ইংরেজি নামঃ গ্রে-হেডেড উডপেকার, (Grey-headed woodpeckerবৈজ্ঞানিক নামঃ Picus canns । উল্লেখ্য, দেশে বহু প্রজাতির কাঠকুড়ালি নজরে পড়ে।

আরো পড়ুন…
•কলজেবুটি কাঠকুড়ালি •পাকড়া কাঠঠোকরা •হলুদগলা কাঠঠোকরা •সবুজ ডোরা কাঠঠোকরা
•তামাটে কাঠকুড়ালি •ধলামাথা কাঠকুড়ালি •ধূসরমাথা বামন কাঠঠোকরা
•খয়রা কাঠকুড়ালি •হলদেচাঁদি কাঠকুড়ালি •বড় কাঠঠোকরা

প্রজাতির গড় দৈর্ঘ্য ৩২ সেন্টিমিটার। ওজন ১৪০ গ্রাম। মাথা মেটে বা ধূসর বর্ণ। গলা থেকে ঠোঁটের নিচে কালো ডোরা। থুঁতনি ও গলা ধূসরাভ-ছাই বর্ণের। পিঠ সবুজাভ। ডানার পালক কালচে-বাদামি। পালকের শলাকায় সাদা ডোরা। লেজ কালো। দেহতল ধূসর-সবুজ। চোখ গাঢ় লাল-বাদামির মিশ্রণ। ঠোঁট স্লেটকালো। স্ত্রী-পুরুষ পাখির   চেহারায় সামান্য পার্থক্য রয়েছে। পুরুষ পাখির কপাল উজ্জ্বল লাল। ঘাড় কালো। স্ত্রী পাখির কপাল ও ঘাড় কালো। তার মধ্যে রয়েছে ধূসর ছিটদাগ। যুবারা ভিন্ন রঙের। ওদের পিঠ ধূসর এবং দেহতল ডোরা সাদা।

প্রধান খাবারঃ উইপোকা, গাছপিঁপড়া, লার্ভা ইত্যাদি। কদাচিৎ ফুলের মধুও পান করে। প্রজনন মৌসুম মে থেকে জুন। মরা গাছে গর্ত করে বাসা বাঁধে। ডিম পাড়ে ৪-৫টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ১৬-১৮ দিন।

লেখকঃ আলম শাইন। কথা সাহিত্যিক, কলাম লেখক, পাখি ও বন্যপ্রাণী বিশারদ এবং পরিবেশবিদ।

Worlds Largest Bangla Birds Blog