
মোটামুটি সুলভ দর্শন সবুজ বক । দেশের সর্বত্রই কমবেশি নজরে পড়ে। সুন্দরবন থেকে শুরু করে রাঙামাটির সাজেক পর্যন্ত ওদের দেখা মিলে। বাস করে নলখাগড়া অথবা হালকা ঝোপজঙ্গলের ভিতরেও। এ ছাড়াও জলাভূমি অঞ্চল যেমন: হাওর-বাঁওড়, বিল-ঝিলেও বিচরণ রয়েছে। দেখতে অনেকটাই নিশি বকের মতো। গায়ের বর্ণেও মিল রয়েছে। চলাফেরাও করে ওদের সঙ্গেই। পরখ করে না দেখলে দুয়ের তফাৎ বের করা কঠিন। পার্থক্য সামান্য। নিশি বক কিছুটা লম্বাটে আর এরা মোটাসোঁটা ও খাটো। বেশিরভাগ সময় গলা খাটো করে এবং শরীরের পালক ফুলিয়ে রাখে, ফলে আরও মোটাসোঁটা দেখায়।
এরা শিকারকালীন সময় একাকী বিচরণ করলেও আশেপাশে থাকে দলের অন্যরা। ঢাকা শহরেও সামান্য বিচরণ রয়েছে। সর্বশেষ দেখা গেছে ২০০০ সালেও। কাকলির ডিওএইচএস-এর একটি পুকুরে মাছ শিকাররত অবস্থায়। সংখ্যায় একটি নয় প্রায় ডজনখানেক পাখি দেখা গেছে। বৈশ্বিক বিস্তৃতি বাংলাদেশ ব্যতীত জাপান, দক্ষিণ আমেরিকা, পশ্চিম আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়ায় বিচরণ রয়েছে।
পাখির বাংলা নামঃ সবুজ বক, ইংরেজি নামঃ Striated Heron | বৈজ্ঞানিক নামঃ Butorides Striata | অঞ্চলভেদে ‘কুঁড়ো বক’ নামেও পরিচিত |
আরও পড়ুন…
•গো বক
•বেগুনি বক
•খুন্তে বক
•হলদে বক
•রঙিলা বক
•ধূসর বক
•কালিবক
•দেশি কানিবক
•ছোট ধলা বক
•নলঘোঙ্গা
•নিশিবক
প্রজাতির গড় দৈর্ঘ্য ৫৬-৫৮ সেন্টিমিটার। মাথা থেকে লেজ পর্যন্ত সবুজ। দূর থেকে কালচে মনে হয়। পিঠ, ঘাড়, পেট ধূসর। মাথার কালো পালকগুচ্ছ দেখতে ঝুঁটির মতো। ডানার প্রান্ত সাদাটে। লেজ খাটো। যুবক পাখির বর্ণ ডোরাযুক্ত সবুজাভ কালচে-বাদামি। চোখ হলুদ। পা মোটা ও খাটো। চোখ হলদেটে।
প্রধান খাবারঃ মাছ, জলজ পোকামাকড়ও খায়। প্রজনন মৌসুমে ঝোপঝাড় কিংবা পানির কাছাকাছি গাছের ডালে বাসা বাঁধে। একই গাছে স্বজাতির অনেকেই বাসা বাঁধে। ডিম পাড়ে ২-৫টি। ফুটতে সময় লাগে ১৯-২১ দিন।
লেখকঃ আলম শাইন। কথাসাহিত্যিক, কলামিস্ট ও বন্যপ্রাণী বিশারদ।