ধূসর বক | Grey heron | Ardea cinerea

155
ধূসর বক
ধূসর বক | ছবি: ইন্টারনেট

ধূসর বক পাখিটির সংখ্যা বেশ কমে এসেছে আজকাল। নব্বই দশকের গোড়ার দিকেও মুন্সীগঞ্জের পদ্মার চরে দেখা যেত ব্যাপক। তখন ছিল সুলভ দর্শন, হালে অসুলভ হয়ে পড়েছে। এদের বিচরণক্ষেত্র যত্রতত্র নয়। মূলত বড় নদ-নদী, হাওর-বাঁওড় কিংবা সুন্দরবন এলাকায় এদের বিস্তৃতি।

বাংলাদেশ ছাড়াও দেখা মেলে এশিয়া, ইউরোপ ও আফ্রিকার কিছু এলাকায়। এরা স্বভাবে শান্ত বিধায় অন্যসব প্রজাতির বকের সঙ্গে সহজেই মিশতে পারে। এমনকি ওদের সঙ্গে এরা শিকারে বের হওয়ারও নজির রয়েছে। শুধু তাই-ই নয়, রাতও কাটায় উঁচু বৃক্ষের শাখায় একই সঙ্গে। বিচরণ করে ছোট-বড় দলে। উড়ার মুহূর্তে কর্কশ স্বরে ডাকে ‘কোয়ারংক… কোয়ারংক’ শব্দে। আমাদের দেশে সচরাচর দেখা যায় এমন বক প্রজাতির মধ্যে এরাই সবচেয়ে বড় আকৃতির।

এদের বাংলা নামঃ ধূসর বক, ইংরেজি নামঃ গ্রে হেরন,  (Grey heron), বৈজ্ঞানিক নামঃ Ardea cinerea | গোত্রের নামঃ আরডিদি । এরা ‘ধূপনি বক’ নামেও পরিচিত।

আরো পড়ুন…
•গো বক •সবুজ বক •বেগুনি বক •খুন্তে বক •হলদে বক •রঙিলা বক
•কালিবক •দেশি কানিবক •ছোট ধলা বক •নলঘোঙ্গা •নিশিবক

প্রজাতিটি লম্বায় ৮৪-১০২ সেন্টিমিটার। মাথা, ঘাড় ও বুক সাদা। মাথার চূড়া কালোডোরা যুক্ত। মাথার তালু ফুঁড়ে বেরিয়েছে কালো পালকের লম্বা ঝুঁটি। লম্বা গলার মাঝ বরাবর রয়েছে মোটা ছাড়া ছাড়া দাগের ডোরা। রয়েছে ঝালর আকৃতির পালক। পিঠ ধূসর। পেটের দুই পাশে কালো ছোপ। উড়ার পালক কালো। ঠোঁট ও চোখের সামনের চামড়া হলুদ। পা কালো-হলুদ। প্রজনন মৌসুমে রং বদলায়। এ সময় ঠোঁট ও পা কমলা-লালচে দেখায়।

প্রধান খাবারঃ মাছ, ব্যাঙ, জলজ পোকামাকড় ও ছোট ইঁদুর। প্রজনন সময় এপ্রিল থেকে জুন। জলাশয় সংলগ্ন বড় গাছের ডালে সরু ডালপালা দিয়ে বাসা বাঁধে। কলোনি টাইপের বাসা। ডিম পাড়ে ৪-৬টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ২৫-২৭ দিন। শাবক স্বাবলম্বী হতে সময় লাগে ৫০ দিনের মতো।

লেখকঃ আলম শাইন। কথাসাহিত্যিক, কলামিস্ট ও বন্যপ্রাণী বিশারদ।

Worlds Largest Bangla Birds Blog