বেগুনি বক | Purple Heron | Ardea purpurea

375
বেগুনি বক
বেগুনি বক | ছবিঃ ইন্টারনেট

আমাদের দেশে যেসব পাখির দিন খুব দ্রুত ফুরিয়ে আসছে বেগুনি বক তার অন্যতম। দুই যুগ আগেও নল খাগড়ার বনে এদের বেশ দেখা যেত। ঝোপঝাড় কমছে। নষ্ট হচ্ছে এদের আবাস। চোরা শিকারি তো আছেই। আমাদের দেশের পক্ষীবিশারদগণের ধারণা এরা অচিরেই এদেশ থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাবে। জোয়ার-ভাটা, কাদা-বালির নির্জন চরে এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের নল খাগড়ার বনের আশপাশে। নল খাগড়ার বন এদের খুব প্রিয়। নির্জন ঝোপের ভেতরে দেহটা লুকিয়ে রেখে শিকারের প্রতীক্ষায় থাকে। একাকি বিচরণ করে। সামাজিকতার ধার ধারে না খুব একটা। সব সময় কোলাহল এড়িয়ে চলে। এমন কি বিশ্রাম নেয়ার প্রয়োজন বোধ করলে অন্য প্রজাতির পাখিদের দৃষ্টিসীমার বাইরে চলে যায়। এদের কণ্ঠস্বর বেশ কর্কশ। উচ্চকণ্ঠে ‘ক্রেক-ক্রেক’ স্বরে ডাকে। শুনতে বিরক্তই লাগে।

পাখিটার বাংলা নামঃ বেগুনি বক, ইংরেজি নামঃ পারপেল হেরন, (Purple Heronবৈজ্ঞানিক নামঃ Ardea purpurea | গোত্রের নামঃ আরডিদি। কারো কারো কাছে এরা চুনী বক নামে পরিচিত |

আরো পড়ুন…
•গো বক •সবুজ বক •খুন্তে বক •রঙিলা বক •হলদে বক •ধূসর বক
•কালিবক •দেশি কানিবক •ছোট ধলা বক •নলঘোঙ্গা •নিশিবক

বেগুনি বক লম্বা ৯৭-১০০ সেন্টিমিটার (গলাসহ)। লম্বা গলাটা একবারেই সরু। গলার দুপাশে আড়াআড়ি কালো ডোরা রেখা। থুতনি সাদা। মাথায় টিকলির মতো লম্বা দুটি পালক বিদ্যমান। শরীরের উপরের পালক বেগুনি-ধূসর। হালকা লাল-নীলবর্ণের মিশ্রণও বলা যায়। বুক গাঢ় শ্লেট-বাদামি। ওড়ার পালক কালো। লেজ কালচে। পা হলুদাভ। স্ত্রী-পুরুষ পাখি দেখতে একই রকম। মাথার টিকলি ছোট। তবে বর্ণে পার্থক্য রয়েছে অপ্রাপ্তবয়স্কদের সঙ্গে। ওদের বর্ণ লালচে-বাদামি।

প্রধান খাবারঃ প্রিয় খাবার মাছ। এছাড়াও ব্যাঙ, জলজ পোকা-মাকড় এদের খাদ্য তালিকায় রয়েছে। প্রজনন সময় জানুয়ারি থেকে এপ্রিল। নল খাগড়ার বনের ভেতর অথবা জলজ বৃক্ষের ওপর চিকনকাঠি, ঘাসলতা-পাতা জড়ো করে বাসা বাঁধে। ডিম পাড়ে ৩ থেকে ৫টি। স্ত্রী-পুরুষ পাখি মিলে ডিমে তা দেয়। ডিম ফুটতে সময় লাগে ২৪-২৮ দিন।

লেখকঃ আলম শাইন। কথাসাহিত্যিক, কলামিস্ট ও বন্যপ্রাণী বিশারদ।

Worlds Largest Bangla Birds Blog