বৈকাল তিলিহাঁস | Baikal Teal | Anas formosa

198
বৈকাল তিলিহাঁস
বৈকাল তিলিহাঁস | ছবি: ইন্টারনেট

বৈকাল তিলিহাঁস অনিয়মিত পরিযায়ী পাখি। পুরুষ পাখি দেখতে দারুণ সুন্দর। সে তুলনায় স্ত্রী পাখির চেহারা অনেকটাই নিষ্প্রভ। শীতে বাংলাদেশে আগমন ঘটে। ঢাকা ও সিলেট বিভাগের জলাশয়ে দেখা যাওয়ার নজির রয়েছে। তবে খুব বেশি রেকর্ড নেই। মাত্র দুইবার দেখার তথ্য রয়েছে। মূলত এরা মিঠাপানির বড়সড়ো জলাশয়ে বিচরণ করে। একাকী কিংবা জোড়ায় খাদ্যের সন্ধানে বের হয়। অন্যসব হাঁসদের মতো খাবার সংগ্রহ করলেও এদের চলন-বলন একটু আলাদা।

সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে, এরা জলের নিচ থেকে ভেসে উঠেই সরাসরি খাড়াভাবে উড়তে সক্ষম। বছরের অন্য সময় হাঁকডাক তেমন না করলেও প্রজনন মৌসুমে ডাকাডাকি বেড়ে যায়। এ সময় পুরুষ পাখি মুরগির মতো ‘ওট-ওট-ওট-’ সুরে ডাকে। স্ত্রী পাখি ডাকে নিচু স্বরে। এদের বৈশ্বিক বিস্তৃতি সাইবেরিয়া, কোরিয়া, চীন ও জাপান পর্যন্ত। তবে কালেভদ্রে দেখা মেলে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, মিয়ানমার ও পাকিস্তানে। সমগ্র বিশ্বে এদের অবস্থান মোটেও ভালো নয়। আই.ইউ.সি.এন প্রজাতিটিকে বিশ্বে সংকটাপন্ন বলে বিবেচিত করেছে। ‘বৈকাল তিলিহাঁস’ বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইনে সংরক্ষিত নয়।

পাখির বাংলা নামঃ বৈকাল তিলিহাঁস, ইংরেজি নামঃ বৈকাল টিল, (Baikal Teal), বৈজ্ঞানিক নামঃ Anas formosa | সমনাম নেই।

আরো পড়ুন…
•সুন্দরী হাঁস •ফুলুরি হাঁস •বড় সাদাকপাল রাজহাঁস •সরু ঠোঁট ডুবরি হাঁস
•ঝুঁটি হাঁস •নাকতা হাঁস •পিয়ং হাঁস •সাদা হাঁস
•নীলশির হাঁস •পাতারি হাঁস •লালশির হাঁস •ভাদি হাঁস
•মরচেরং ভূতিহাঁস •বালিহাঁস •উত্তুরে ল্যাঞ্জাহাঁস •পান্তামুখী হাঁস

লম্বায় ৪১ সেন্টিমিটার। ওজন ২০০ গ্রাম। স্ত্রী-পুরুষ পাখির চেহারা ভিন্ন। ভিন্ন প্রজনন পালকও। এ সময় পুরুষ পাখির মাথায় এবং মুখে বিভিন্ন ধরনের আঁকিবুঁকি দেখা যায়। এ ছাড়া মাথার চাঁদি, ঘাড় ও গলা কালো। মুখ পীতাভ। মুখে স্পষ্ট কালো পট্টি। যা চোখের নিচ থেকে গলার নিচে গিয়ে ঠেকেছে। অপরদিকে চওড়া সবুজ পট্টিটি চোখের ওপর দিক থেকে হয়ে ঘাড়ে দিকে চলে গেছে। পিঠের দিক ব্রোঞ্জ-সবুজ মিশ্রিত। লেজের তলায় স্লেট রঙের। বুকে হালকা গোলাপির ওপর কালো ফুটকি। পেট সাদাটে। অন্যদিকে স্ত্রী পাখির দেহ বাদামি। মাথার চাঁদি কালচে। উভয়ের ঠোঁট কালচে, (স্ত্রী পাখির ঠোঁটের গোড়ায় সাদা পট্টি)। চোখ বাদামি। পা ও পায়ের পাতা স্লেট-নীল। অপ্রাপ্তবয়স্কদের দেখতে স্ত্রী পাখির মতো।

প্রধান খাবারঃ জলজ পোকামাকড়, শামুক, কেঁচো, জলজ উদ্ভিদের কচি ডগা এবং ঘাস বীজ। প্রজনন মৌসুম মে থেকে জুন। এ সময় সাইবেরিয়া অঞ্চলের জলাশয়ের কাছে উঁচু তৃণভূমিতে বাসা বাঁধে। ডিম পাড়ে ৮-১০টি।

লেখকঃ আলম শাইন। কথাসাহিত্যিক, কলামলেখক, বন্যপ্রাণীবিশারদ ও পরিবেশবিদ।

Worlds Largest Bangla Birds Blog